সেমিফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ আরো দীর্ঘ হলো প্রোটিয়াদের, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

খেলা ডেস্ক


নভেম্বর ১৭, ২০২৩
০২:৩১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ১৭, ২০২৩
০২:৩৪ পূর্বাহ্ন



সেমিফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ আরো দীর্ঘ হলো প্রোটিয়াদের, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

পঞ্চম বারের মতো এবারও বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিল প্রোটিয়ারা।


দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য বিশ্বকাপ মানেই করুণ সব গল্প। এখন পর্যন্ত তাদের অংশ নেওয়া আটটি বিশ্বকাপের মধ্যে পাঁচবারই সেমিফাইনাল অব্দি খেলেছে তারা। টি-টোয়েন্টি হিসাব করলে সংখ্যাটা হবে সাত। কিন্তু যুগের পর যুগ আক্ষেপকে সঙ্গী করে বেড়াচ্ছেন প্রোটিয়ারা। খুব বেশি প্রত্যাশা না থাকলেও ভারত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল দলটি। সুযোগ ছিলো আক্ষেপ- হতাশা দূর করে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলার। কিন্তু পাল্টায়নি প্রোটিয়াদের স্বপ্নভঙ্গের গল্প। তাদের ব্যাটিং ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে অষ্টম বারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া।

অস্টেলিয়ান বোলারদের আগুনে বোলিংয়ের সামনে খেই হারিয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে মিডল অর্ডার ব্যাটার ডেভিড মিলারের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে ২১৩ রানের লক্ষ্য দিতে পারে পঞ্চমবার সেমিফাইনাল খেলা দলটি। সাধামাটা সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে বিস্ফোরক ব্যাটিং করেন অজি দুই ওপেনার। দুই ওপেনার বিদায় নিতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলা গেলেও পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নদের হারানো সম্ভব হয়নি। ১৬ বল আগে ৩ উইকেট হাতে রেখে অষ্টমবারের মতো ফাইনালে নাম লেখালো প্যাট কামিন্সের দল। আর তাতেই আরও একবার দুর্ভাগ্য সঙ্গী হলো প্রোটিয়াদের।

১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু। ১৯৯২ সালে পঞ্চম আসর থেকে বিশ্বকাপ খেলা শুরু করে প্রোটিয়ারা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২২ বছর নির্বাসিত থাকায় প্রথম চারটি বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারেনি তারা। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর প্রতিটা বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে আসছে। প্রথম আসরেই তারা পৌঁছেছিলো সেমিফাইনালে। এ পর্যন্ত মোট ৯টি ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলে পাঁচ বার সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ পায় তারা। কিন্তু এবারকার মতো প্রতিবারই হতাশার গল্পই লিখেছে। ২৪ বছর আগে এমন একটি সেমিফাইনালে ম্যাচ টাই করেও ফাইনালে উঠতে পারেনি ‘চোকার’ তকমা পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯২, ১৯৯৯, ২০১৫ কিংবা ২০২৩ গল্পটা একই। সেমিফাইনালে বিদায় নিয়ে হতাশায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন প্রোটিয়ারা, প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা সান্ত্বনা দিচ্ছেন—এটা যেন বিশ্বকাপের সবচেয়ে পরিচিত একটা দৃশ্য।

ব্যাটিং ব্যর্থতায় খুব বেশি লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়াকে দিতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ২১৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৬ ওভারে ৬০ রান তুলে ফেলেছিলো অজিরা। সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই এইডেন মার্করামের বলে বোল্ড হন ডেভিড ওয়ার্নার। এক রানের ব্যবধানে রানের খাতা না খুলেই ফিরে যান মিচেল মার্শ। তৃতীয় উইকেটে স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে ওপেনার ট্র্যাভিস হেড এগিয়ে যান। অজি এই ওপেনার টিয়া বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলে ফেলেন ৪৮ বলে ৬২ রানের ইনিংস। 

হেডের বিদায়ের পরই চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। নিয়মিত উইকেট হারানোর পাশাপাশি স্কোরবোর্ডে রানের চাকা অচল হয়ে পড়ে। অষ্টম উইকেটে প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ক মিলে অবিচ্ছন্ন- রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। এই নিয়ে অষ্টমবারের মতো ফাইনালে নাম লেখালো অজিরা।

প্রোটিয়া বোলারদের মধ্যে জেরাল্ড কোয়েটজি, তাবরাইজ শামসি দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। কেশব মহারাজ, এইডেন মার্করাম প্রবল চাপ প্রয়োগ করেছেন। মহারাজ ২৪ রান খরচায় শিকার করেন একটি উইকেট। অন্যদিকে মার্করাম ২৩ রান খরচায় শিকার করেন একটি ‍উইকেট।

এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে প্রোটিয়ারা যেন কত তাড়াতাড়ি ম্যাচ শেষ করবেন সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন। এদিন কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অস্ট্রেলিয়ার আগুনে বোলিংয়ে সামনে দাঁড়াতেই পারেনি প্রোটিয়া ব্যাটাররা। নিয়মিত বিরতিতে একের পর এক উইকেট হারতে থাকেন তারা। কেবল এক প্রান্ত আগলে রেখে দলের স্কোরকে দুইশো পেরুতে ভূমিকা রেখেছেন ডেভিড মিলার। তার দারুণ সেঞ্চুরিতে মূলত অস্ট্রেলিয়াকে ২১৩ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে প্রোটিয়ারা। ১১৬ বলে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ১০১ রানের ইনিংস খেলেন মিলার।

অস্ট্রেলিয়ার আগুনে বোলিংয়ের সামনে ৪৯ ওভার ২ বলে ২১২ রানে অলআউট হয়ে যায় প্রোটিয়ারা। অস্ট্রেলিয়ার বোলার মধ্যে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন কামিন্স ও স্টার্ক। হ্যাজলউড ও হেড নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।



এএফ/০১