খেলা ডেস্ক
ডিসেম্বর ০২, ২০২৩
০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ০২, ২০২৩
০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিশির ভেজা লাক্কাতুরা চা বাগানে ভেসে বেড়ানো বুনোগন্ধটা তখনও বেশ টাটকা। সিলেট টেস্টের পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনটার প্রথম ঘণ্টা পেরিয়েছে মাত্র। মধ্যাহ্ন বিরতির তখনও এক ঘণ্টা বাকি। তার আগেই গ্যালারিতে বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। মাঠে ক্রিকেটারদেরও উল্লাস। চায়ের দেশে যে আরেকটা ইতিহাস গড়ল তারা। ১৫০ রানের জয় দিয়ে টেস্ট সিরিজ শুরু। যে জয়ের পথে নায়ক স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা উঁকি দিলেও গলার কাঁটা হয়ে বেধেছিলেন ড্যারিল মিচেল। আগের দিন ৪৪ রানে অপরাজিত থেকে শেষ করা এই ব্যাটসম্যান আজ সকালের শুরুতেই ফিফটি তুলে নেন। তাতে শঙ্কা জাগে আরও একটা মুলতান, ফতুল্লা কিংবা সাগরিকার দুঃস্মৃতির।
তবে স্পিনার নাঈম হাসান তা হতে দেননি। তার বলে সুইপ করতে গিয়েছিলেন মিচেল। চেয়েছিলেন বাউন্ডারি পার করতে। কিন্তু ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে থাকা তাইজুল সেটা লুফে নেন দ্রুতই। বাংলাদেশের জয়টা যেন তখনই নিশ্চিত হয়ে যায়। বাকি ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতার।
যে ক্যাচের মাধ্যমে তাইজুল বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা জোরালো করেন, ম্যাচটা হেরে গেলে সেই তাইজুলই হতে পারতেন খলনায়ক। প্রথম ইনিংসে যে কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তখন ৬৩ রানে অপরাজিত কিউই ব্যাটসম্যান৷ সেই কেন পরে সেঞ্চুরি হাকান।
শুধুই ক্যাচ নয়, তাইজুলই মূলত জয়ের নায়ক। ৭৫ রান খরচায় ৬ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা যে তিনিই। ক্যারিয়ারের ১২তম বার তিনি পেলেন ৫ উইকেটের দেখা। এই ম্যাচেও দুই ইনিংস মিলিয়ে পেয়েছেন ১০ উইকেটের দেখা।
তাইজুলের স্পিন ঘূর্ণিতেই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এসেছে জয়ের দেখা। এই মাঠ দ্বিতীয় টেস্টেই পেলো জয়ের দেখা। এর আগে ২০১৮ সালে ভেন্যুর অভিষেক টেস্টে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছিল টাইগাররা। সেই ম্যাচেও দুই ইনিংসে ১০ উইকেট শিকার করেছিলেন তাইজুল।
৫ বছর পর সিলেটে স্মৃতি যেন রোমন্থন করলেন তিনি। ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে জানালেন এটা সম্ভব হয়েছে সতীর্থদের সহায়তায়।
তাইজুল বলেছেন, 'ক্রিকেট তো টিম ওয়ার্ক। দলের সবাই মিলে আমরা খেলেছি। তাতে সম্ভব হয়েছে এমন খুশির মুহূর্ত পেতে। এই জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। যা কাজে লাগিয়ে আমরা মিরপুরেও জিততে চাই।'
আগামী ৬ ডিসেম্বর থেকে হোম অব ক্রিকেটে গড়াবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট।
আরসি-০৫