১৩ দেশের ৩৭ ব্যক্তির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

সিলেট মিরর ডেস্ক


ডিসেম্বর ০৯, ২০২৩
০২:৪৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ০৯, ২০২৩
১০:৩৬ অপরাহ্ন



১৩ দেশের ৩৭ ব্যক্তির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা


মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৩ দেশের ৩৭ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী রবিবার মানবাধিকার দিবস ও মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার ৭৫তম বার্ষিকীর প্রাক্কালে গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও অর্থ বিষয়ক দপ্তর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়। 

ভিসা বিধি-নিষেধ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় পড়া ৩৭ ব্যক্তি আফগানিস্তান, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো, হাইতি, ইরান, লাইবেরিয়া, চীন, সুদান, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা, জিম্বাবুয়ে, সিরিয়া ও জিম্বাবুয়ের নাগরিক।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য ও কানাডাকে সঙ্গে নিয়ে এসব নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং ক্ষতিকর মানবাধিকার লঙ্ঘনগুলোর কয়েকটি মোকাবেলা করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সংঘাতসম্পর্কিত যৌন সহিংসতা, জোরপূর্বক শ্রম ও আন্তর্দেশীয় নিপীড়ন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত রাখবে।

ব্লিনকেন বলেন, ‘আমাদের উদ্যোগ (নিষেধাজ্ঞা) জঘন্য বিভিন্ন অপরাধ, বিশেষ করে আইনের শাসনের দুর্বল এমন পরিবেশে সরকারের নিপীড়নের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়া রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী, নারী, নাগরিক সমাজের নেতা ও কর্মী, ‘লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্সজেন্ডার, কুইর, ইন্টারসেক্স প্লাস (এলজিবিটিকিউআইপ্লাস)’ ব্যক্তি, মানবাধিকারকর্মী, পরিবেশবাদীসহ দুর্বল ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যদের প্রতি সমর্থন এবং তাদের ওপর নিপীড়নের জবাবদিহিকে উত্সাহিত করবে। বিশ্বব্যাপী নারী ও কন্যাশিশুদের নিপীড়নের জন্য দায়ী কয়েকজনকে চিহ্নিত করে এবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দক্ষিণ সুদানের একজন গভর্নর ও কাউন্টি কমিশনার রয়েছেন। তাঁদের বাহিনী ও মিলিশিয়ারা ধর্ষণের জন্য দায়ী।

এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞার শিকার তালেবান নেতারা আফগান নারীদের মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ালেখায় বাধা সৃষ্টি করেছেন। 

ইরান সরকারকে দেশে ও বিদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ অপরাধীদের অন্যতম হিসেবে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইরান সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহারের উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি প্রাণঘাতী বল প্রয়োগ, নির্বিচারে আটক ও নির্যাতনের মাধ্যমে ভিন্নমতাবলম্বী ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের দমনের পাশাপাশি নজরদারি, ভয় দেখানো এবং প্রাণঘাতী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিদেশে ভিন্নমতাবলম্বীদের লক্ষ্যবস্তুতে করার কথা বলেন। 

অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবার দুজন ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করেছে। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্র সরকার, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং ধর্মীয়, ব্যবসা ও অন্যান্য স্থাপনার ওপর নজরদারি করতে লোক নিয়োগ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবিষয়ক দপ্তর চীনের শিনজিয়ানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে দুজন চীনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। পররাষ্ট্র দপ্তর ‘উইঘুর মানবাধিকার নীতি আইন’ কংগ্রেসে উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের (স্বরাষ্ট্র দপ্তর) অধীন ইন্টার এজেন্সি ফোর্সড লেবার এনফোর্সমেন্ট টাস্কফোর্স’ উইঘুরে জোরপূর্বক শ্রম প্রতিরোধ আইনে চীনের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত করেছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জিম্বাবুয়ে, সিরিয়া ও উগান্ডার জন্য ভিসানীতি সংশোধন ও সম্প্রসারণ করেছে। এর মাধ্যমে নিপীড়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যান্য অগ্রহণযোগ্য কাজের সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের ওপর ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইতিতে দুজন সন্দেহভাজন অপরাধীর বিচারের জন্য তাদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করেন।



এএফ/০১