মন্ত্রিসভার পরিধি বাড়ছে, নারীই আসছেন অন্তত দুজন

সিলেট মিরর ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪
০২:৪৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪
০৭:৩৭ অপরাহ্ন



মন্ত্রিসভার পরিধি বাড়ছে, নারীই আসছেন অন্তত দুজন


  • রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে
  • হতে পারেন চার নেতার পরিবারের কেউও


টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নতুন মন্ত্রিসভায় আরও তিন সদস্য যুক্ত হতে যাচ্ছেন। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন শেষে নির্বাচিত সদস্যদের মধ্য থেকে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় যুক্ত করবেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা এ প্রসঙ্গে দেশ রূপান্তরকে বলেন, দলীয় পদ বা সংসদ সদস্য মনোনয়নের মতো বিষয়ে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবারের ত্যাগ এবং দলের প্রতি কার কতটা কমিটমেন্ট (আনুগত্য) তা গুরুত্ব দিচ্ছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায়ও তিনি অনেককেই পুরস্কার হিসেবে যুক্ত করেছেন। ফলে সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় সরকার প্রধান শেখ হাসিনা যাকেই যুক্ত করবেন তাকে মূলত পুরস্কৃত করবেন। দলের এসব নেতারা আরও বলেন, সবকিছুর আগে প্রধানমন্ত্রী যাকে পদ দিচ্ছেন তার পরিবারের ত্যাগের কথা ভাবেন। বিবেচনায় নেন আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে অবদান এবং প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির বিষয়টি। সব ক্ষেত্রেই এগুলো বিবেচনায় নিয়ে পুরস্কৃত করতে চান শেখ হাসিনা।

ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারণী পযায়ের একাধিক নেতা জানান, সম্প্রসারণ করা মন্ত্রিসভায় নারী সদস্যদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ৩৬ জন সদস্য নিয়ে দেশ পরিচালনায় যাত্রা শুরু করেন। তার এই পরিষদে পূর্ণ মন্ত্রী ২৫ জন ও প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন ১১ জন। সেখানে তিনজন বাড়িয়ে আপাতত ৪০ সদস্যের মন্ত্রিসভা করবেন বলে দেশ রূপান্তরকে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

গত মেয়াদের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মিলিয়ে সংখ্যা ছিল ৪৮ জন। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট একাধিক ব্যক্তি দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিমন্ত্রীর সংখ্যা কম রেখেছেন। উপমন্ত্রী করা হয়নি। তবে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটলে মন্ত্রিসভার সদস্য বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পযায়ের একাধিক নেতা ও ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন তিনজনের মধ্যে দুজনই নারী ও একজন পুরুষ মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে যাচ্ছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভার আকার বাড়তে পারে। সেখান থেকে নির্বাচিত সদস্যকে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং সংস্কৃতি ছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হয়নি। এ তিনটি দপ্তর এখনো প্রধানমন্ত্রীর অধীনে রয়েছে।

জানা গেছে, এর মধ্যে শ্রম মন্ত্রণালয়কে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে এবার। শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নানা কলাকৌশলে সরকারের ভেতর এক ধরনের দুশ্চিন্তা রয়েছে। তাই পশ্চিমা দেশটির কলাকৌশল মোকাবিলা করতে হলে জানা-বোঝা কাউকেই এ মন্ত্রণালয়ে বসাতে হবে বলে মনে করেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার দক্ষ ও অভিজ্ঞ কারও হাতে তুলে দিতে চান প্রধানমন্ত্রী। গত মন্ত্রিসভায় এ দপ্তরে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে একজন নারী নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও গুরুত্ব বিবেচনায় এবার পুরুষ কোনো নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। দায়িত্বশীল একাধিক নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, অন্য আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয়েও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা ভাবছেন সরকার প্রধান। এ দফায় না হলেও সরকারের ছয় মাস পূর্ণ হলে আরেক দফা সম্প্রসারণ করা হবে মন্ত্রিসভা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দুজন নারী নেতাকে দেয়া হবে বলে জানা গেছে। যাদের দুজনই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ট একজন দেশ রূপান্তরকে বলেন, রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। সঙ্গীত শিল্পী হিসাবে বন্যার ব্যক্তিগত পরিচিতি মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে নিয়েছে তাকে।

নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় যুক্ত হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যরাও। এর আগে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে চার নেতার পরিবারের একাধিক সদস্যকে রাখা হয়েছে। এবারই প্রথম মন্ত্রিসভায় চার নেতার পরিবারের কাউকে রাখা হয়নি। অতীতের ধারাবাহিকতায় চার নেতার পরিবার থেকে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ রয়েছে।



দেশ রূপান্তর/ এএফ-০১