সিলেটে বস্তির শিশুদের শিক্ষায় যাত্রা শুরু করল ‘ড্রিম স্কুল’

সিলেট মিরর ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪
০৩:৫১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪
০৫:২৯ অপরাহ্ন



সিলেটে বস্তির শিশুদের শিক্ষায় যাত্রা শুরু করল ‘ড্রিম স্কুল’


  • উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিল ড্রিম স্কুলের ১৭০০ শিক্ষার্থী
  • সিলেটের ১ হাজার বস্তিতে এরকম ১ হাজার স্কুল করার চিন্তা


‘স্বপ্নের ছায়াতলে আপনাকে স্বাগতম’ স্লোগানে সিলেটের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠির শিশুদের জন্য ব্যতিক্রমী মহতি এক উদ্যোগ নিয়েছে প্রবাসীদের দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা সিলেটের বস্তি এলাকার ৩০টি স্কুল নিয়ে চালু করেছে ‘ড্রিম স্কুল’।

মঙ্গলবার নগরের আবুল মাল আবদুল মুহিত কমপ্লেক্সে স্কুলগুলোর ১ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়েছে ‘ড্রিম স্কুলে’র।

প্রবাসীদের দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জমজম বাংলাদেশ’ ও ‘সালাম চ্যারিটি’ এ উদ্যোগ নিয়েছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ৩০টি স্কুল চালু থাকলেও আরো ৩৫টি স্কুলের কাজ শেষের দিকে। তাদের লক্ষ্য সিলেটের ১ হাজার বস্তির জন্য ১ হাজারটি বিদ্যালয় স্থাপন করতে চান। প্রত্যেক মানুষের জীবনের সমান সুযোগ থাকা উচিত-এমন ভাবনা থেকেই তারা বস্তির শিশুদের জীবনমান পরিবর্তনের সুযোগ করে দিতে চান। 

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং অধ্যাপক ও সালাম চ্যারিটির চেয়ারম্যান শরিফ বান্না এমবিই’র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন জমজম বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত জয়েন্ট সেক্রেটারি ড. সৈয়দ ওমর খৈইয়াম, জমজম বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মুইজ চৌধুরী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘সালাম চ্যারিটি ও জমজম বাংলাদেশ মহৎ একটি উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে তারা যদি ১ হাজার স্কুলও করতে চায় তাহলে আমার সব শক্তি দিয়ে আমি তাদের সহযোগিতা করব।’ 

তিনি বলেন, ‘একজন  মন্ত্রী, সচিব, ডিজি, সাংবাদিক, পুলিশ, ব্যবসায়ীর সন্তান যেকোনো জায়গায় পড়াশোনা করতে পারে। যদি নিম্ন আয়ের মানুষের সন্তানদের ভালো শিক্ষাদান করানো যায় তাহলে তারাও চিকিৎসক, প্রকৌশলী হতে পারবে। এটা আমাদের জন্যও গৌরবের অর্জন হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জমজম বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত জয়েন্ট সেক্রেটারি ড. সৈয়দ ওমর খৈইয়াম বলেন, ‘জমজম বাংলাদেশ ও সালাম চ্যারিটির মহান যাত্রা সিলেটের মাটিতে শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারা বাংলাদেশে হবে। দুই সংগঠন একত্রিত হয়েছে, তাদের এই প্রতিষ্ঠা আমাদেরকে নতুন পথের সন্ধান দেবে।’

জমজম বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মুইজ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের জমজম বাংলাদেশ ও  সালাম চ্যারিটি একসঙ্গে কাজ করবে। আমরা শুনেছি সিলেটে এক হাজারের বেশি বস্তি রয়েছে। আমাদের ডিম প্রজেক্ট ১০০০ বস্তিতে পৌঁছাবে, ইনশাআল্লাহ। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই ও দোয়া চাই।’

সভাপতির বক্তব্যে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং অধ্যাপক ও সালাম চ্যারিটির চেয়ারম্যান শরিফ বান্না এমবিই বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, মানুষ হিসেবে সবাই সমান। প্রত্যেক মানুষের জীবনের সমান সুযোগ থাকা উচিত। তা সে যেখানে জন্মগ্রহণ করুক, যে পরিবারের জন্মগ্রহণ করুক। সালাম চ্যারিটি ও জমজম বাংলাদেশ এই আকাঙ্খার  বাস্তব রূপ দিতে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করবে। আমাদের লক্ষ্য হলো কেউ যেন পেছনে না থাকে।’

দিনব্যাপী উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ড্রিম স্কুলের ১ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে। আনন্দমুখর দিনটিতে তাদের জন্য অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন বিভিন্ন বিশিষ্টজনরা। এছাড়াও সাংষ্কৃতিক পরিবেশনা, মজাদার খাবার বিতরণ ও নানা ধরণের খেলাধুলার আয়োজন ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য। 


এএফ/০১