বেঁচে ফেরা দুজনের বয়ানে অগ্নিকাণ্ডের বর্ণনা

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ০১, ২০২৪
০৩:৩৪ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০১, ২০২৪
০৩:৩৪ অপরাহ্ন



বেঁচে ফেরা দুজনের বয়ানে অগ্নিকাণ্ডের বর্ণনা


আগুন লাগার পর দৌঁড়ে আমরা ওপরে যাই। ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরের লোকজন ছাদে উঠার চেষ্টা করেন। ৭ তলা ভবনের পুরোটা আগুনের ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে যায়। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল অনেকের। অনেকে ওই ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাঁচার জন্য তারা বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করেন। অনেকে গ্লাস ভেঙ্গে গ্রিল ধরে নামেন। অনেকে লাফ দেন।

আজ শুক্রবার (১ মার্চ) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে কথাগুলো বলছিলেন বেইলি রোডের বাণিজ্যিক ভবনের অগ্নিকাণ্ড থেকে বেঁচে ফেরা দুজন ব্যক্তি। তারা দুজনই ওই ভবনের ভিন্ন দুটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন।

নিচতলায় অবস্থিত ‘মেজবানি খানা’ নামে রেস্টুরেন্টের কর্মী কামরুল হাসান বলেন,  আমরা প্রথমে একটা শব্দ পেয়ে বাইরের দিকে তাকাই। তখন গেটের সামনে আগুন দেখতে পাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুনের ধোঁয়া পুরো বিল্ডিংয়ে ছড়িয়ে যায়। আমরা আর গেট দিয়ে বের হতে পারি নাই। তখন আমরা যারা রেস্টুরেন্টে ছিলাম তারা ওপরের দিকে উঠে যাই। কিন্তু সিঁড়িতে ৫ তলা পর্যন্ত উঠে আটকে যাই। আগে থেকেই অনেক লোক সেখানে অবস্থান করছিল। ওপরে আর উঠতে পারি নাই লোকের কারণে। ওই ফ্লোরে একটা রেস্টুরেন্টে আছে, আমরা কিছু মানুষ তখন সেখানে আশ্রয় নেই।

আগুনের ধোঁয়ায় ভবনে থাকা অধিকাংশ মানুষ অসুস্থ হয়ে যায় জানিয়ে তিনি বলেন, ধোঁয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় যায়৷ যে যার মতো এদিক-ওদিক দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে থাকে। যতটুকু দেখেছি অনেকে এই ধোঁয়ার কারণে হাঁটতে পারছিল না। এই ধোঁয়া বের হওয়ার মতো কোনও ব্যবস্থা নাই। ওই ফ্লোরের রেস্টুরেন্টের কিচেনে একটু ফাঁকা ছিল, ওইটা দিয়ে আমি নিচে লাফ দেই। তারপর আর আমার কোনও হুঁশ ছিল না।

ভবন থেকে বের হওয়ার জরুরি কোনও সিঁড়ি ছিল না জানিয়ে কামরুল বলেন, আমি ওইখানে ১ বছর ধরে কাজ করি। লিফট আর সিঁড়ি ছাড়া বিল্ডিং থেকে নামার অন্য কোনও ব্যবস্থা দেখি নাই।

কাঁচে ঘেরা বদ্ধ ভবনে বাতাস আসা-যাওয়ার মতো অবস্থা ছিল না জানিয়ে ওই ভবনের তিন তলায় অবস্থিত ‘খানাস রেস্টুরেন্টে’র কর্মী জুবায়ের বলেন, ঘটনার সময় আমি খাবার তৈরির কাজ করছিলাম। পরে আমাদের ক্যাশিয়ার এসে বলে নিচে আগুন লাগছে। সবাই ওপরে আসেন। আমি বের হয়ে নিচে নামার জন্য গেলে দেখি সবাই ওপরেই উঠতেছে। নিচ থেকে সিঁড়ি দিয়া কালো ধোঁয়া ওপরেই আসতাছে। দৌঁড়াইয়া ছাদে যাই।  সেইখান থেকে অনেকের দেখা দেখি আমিও ছাদ থেকে লাফ দেই। তারপর আর কিছু মনে নাই। আমারে হাসপাতালে নিয়া আসে।

ভবনের রেস্টুরেন্টগুলোতে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারগুলো নিচে থাকে বলে জানান তিনি।


এএফ/০৬