হারের আক্ষেপে মলিন সৌম্য-হৃদয়-তাসকিনের কীর্তি

খেলা ডেস্ক


মার্চ ১৫, ২০২৪
১১:০৪ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ১৬, ২০২৪
০৩:৫৬ অপরাহ্ন



হারের আক্ষেপে মলিন সৌম্য-হৃদয়-তাসকিনের কীর্তি


হৃদয়ের অমন দুর্দান্ত ইনিংসের পর বল হাতে ৪৩ রানের মধ্যেই যখন তিন উইকেট তুলে নিলেন বাংলাদেশের বোলাররা তখন সিরিজ জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবার অবকাশ ছিল না। তবে হলো উল্টোটি। আগের ম্যাচের শান্ত-মুশফিক জুটির মতো শ্রীলঙ্কা দল জ্বলে উঠলেন পাথুম নিশাঙ্কা ও চারিথ আসালাঙ্কা। তাদের ১৮৫ রানের জুটি বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিল। ৩ উইকেটে হারের পর সিরিজ জয়ে সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা স্থায়ী হলো বাংলাদেশের।

২৮৭ রানের লক্ষ্যে নামা লঙ্কান ব্যাটিং ইনিংসে শরিফুল ইসলাম প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরের পথ ধরিয়ে দিয়েছেন আভিস্কা ফার্নান্দোকে। ফার্নান্দো পেয়েছেন গোল্ডেন ডাকের স্বাদ। লেন্থ বলে ব্যাটের কানা ছুঁইয়ে স্লিপে সৌম্যর ক্যাচে পরিণত হয়েছেন। ষষ্ঠ ওভারে তাসকিন কুশলকে ও পরের ওভারে শরিফুল সাদিরাকে ফেরালে ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। এর পর নিশাঙ্কা ও আসালাঙ্কা গড়ে তোলেন প্রতিরোধ।

নিশাঙ্কা ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন এদিন। আউট হন ১১৩ বলে ১১৪ রান করে। ১৩ চার ও ৩ ছয়ে করেন এ রান। তার সঙ্গে জুটি গড়া আসালাঙ্কা ফেরেন সেঞ্চুরি থেকে ৯ রান দূরে থাকতে। এই উইকেট পাওয়ার মাধ্যমে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শততম উইকেট শিকার করলেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের অষ্টম বোলার হিসেবে গড়েছেন এ কীর্তি। পেসারদের মধ্যে চতুর্থ।

৯৮ উইকেট নিয়ে আজকের ম্যাচ শুরু করেন তাসকিন। বোলিং পরিবর্তন করে ৬ষ্ঠ ওভারে তাসকিন আহমেদকে নিয়ে আসেন শান্ত। এসেই প্রথম বলে উইকেট তুলে নেন ঢাকা এক্সপ্রেস। ফেরান কুশল মেন্ডিসকে। ১৩ বলে ১৬ রান করা কুশল ক্যাচ দেন মুশফিকের হাতে।

আসালাঙ্কাও ক্যাচ দিয়েছেন মুশফিকের হাতে। ২০১৪ সালের ১৭ জুন মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে ওয়ানডে অভিষেক করেছিলেন তাসকিন। ৭২তম ম্যাচে এসে ছুঁলেন উইকেট সংখ্যায় সেঞ্চুরির মাইলফলক।

৭ রানের ব্যবধানে দুজন ফিরলেও বাকি পথটুকু লঙ্কানরা পাড়ি দেন ধৈর্যে্যর সঙ্গে । তাসকিন ও শরিফুল ২টি করে এবং তানজিম, মিরাজ ও তাইজুল ১টি করে উইকেট শিকার করেন।

এর আগে সৌম্য সরকারের রেকর্ডগড়া ইনিংসের পর তাওহীদ হৃদয়ের ক্যারিয়ারসেরা অপরাজিত ৯৬ রানের দারুণ ইনিংসে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ উইকেটে ২৮৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। শেষ দুই বলে টানা দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে হৃদয় অপরাজিত থাকেন ৯৬ রান। ১০২ বলে ৩ চার ও ৫ ছয়ে সাজানো তার ইনিংস।

গত এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে ফিফটির পর দীর্ঘদিন ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না তাওহীদ হৃদয়। এর পর আর একটি মাত্র ফিফটি করেছিলেন। সেটাও গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। অবশেষে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের ৭ম ফিফটির দেখা পেলেন হৃদয়। 

ফিফটি দিয়ে অভিষেক করা হৃদয় আজ ৪১তম ওভারে ব্যক্তিগত ৭৪ বলে ৫০ পূর্ণ করেন। সৌম্যর সঙ্গে ৫৫, মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৪৩ ও মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে ১৬ রানের জুটি গড়ার পর হৃদয়-তানজিমের জুটিতে আসে ৪৭ রান। তাসকিনের সঙ্গে জুটি দাঁড়ায় ২৩ বলে ৫০ রানের। শেষ ৫ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৫৪ রান।

এর আগে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ৬৪ ইনিংসে ২ হাজার ওয়ানডে রান স্পর্শ সৌম্যর। সৌম্য ভেঙেছেন ৬৫ ইনিংসে দ্রুততম ২ হাজার রানে লিটন দাস ও শাহরিয়ারের নাফিসের আগের রেকর্ড।

দশম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২ হাজার রান করেন সৌম্য সরকার। ২০তম ওভারে হাসারাঙ্গাকে টানা দুটি চার মেরেছেন সৌম্য, এর প্রথমটিতে ক্যারিয়ারে ২ হাজার রান পূর্ণ হয়েছে তার। পরের ওভারে কুমারাকে আপার কাটে মেরেছেন ম্যাচের প্রথম ছক্কা।

সৌম্যর ফেরেন ৬৬ বলে ৬৮ রানে। শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৩৯ বলে ৪০ রান। এছাড়া মুশফিক ২৮ বলে ২৫, মিরাজ ১৮ বলে ১২, তানজিম ৩৩ বলে ১৮ এবং তাসকিন ১০ বলে অপরাজিত ১৮ রান করেন।

লঙ্কানদের হাসারাঙ্গা ৪টি, মাদুশঙ্কা ২টি ও মাদুশান ১টি উইকেট পান।



এএফ/০৬