মামুন হত্যা : প্রেমিকার ব্যক্তিগত ভিডিও বন্ধুর ফোনে, না দেওয়ায় খু ন

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুলাই ১১, ২০২৪
০২:৩৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১১, ২০২৪
০২:৩৪ পূর্বাহ্ন



মামুন হত্যা : প্রেমিকার ব্যক্তিগত ভিডিও বন্ধুর ফোনে, না দেওয়ায় খু ন


কক্সবাজারে রেললাইনের পাশ থেকে আবদুল্লাহ আল-মামুনের (৩০) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উন্মোচন হয়েছে। মোবাইল ফোনে থাকা তরুণীর আপত্তিকর ভিডিওর জেরে তাঁর বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদারই তাঁকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে র‍্যাব। এর আগে রবিবার রামুর রশিদনগর ইউনিয়নের খাদেমের পাড়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়।

পুলিশ জানায়, নিহত মামুন সদর উপজেলার খুরুলিয়া ঘাটপাড়ার মৃত নবী হোসেনের ছেলে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে মঙ্গলবার রামু থানায় মামলা করেন নিহতের ছোট ভাই মো. সেলিম। এতে আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের। সেদিন বিকালেই অভিযান চালিয়ে মামুনের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশিদার শাহেদ হোসেনকে (৩০) গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে হত্যার নেপথ্য কাহিনী।

র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মামুন হত্যার বিস্তারিত তুলে ধরেন ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ শরীফুল আহসান। তিনি বলেন, ঈদগাঁও উপজেলার এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল শাহেদের। সম্পর্ক চলাকালে তাঁরা দুজনেই ঘনিষ্ট মুহূর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। একসময় মেয়েটির সঙ্গে শাহেদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মেয়েটি শাহেদের মোবাইল ফোন থেকে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তার সামনে মুছে ফেলতে তাগাদা দেয়। এতে রাজি হলেও সেগুলো গোপনে সংরক্ষণের জন্য আগে বন্ধু মামুনের মোবাইল ফোনে পাঠান। এরপর নিজের ফোন থেকে প্রেমিকার সামনে সেগুলো মুছে ফেলেন শাহেদ।

পরে প্রেমিকার ছবি ও ভিডিও ফেরত চাইলে এবং তার ফোন থেকে সেগুলো মুছে ফেলতে বললে তাতে অনীহা প্রকাশ করেন মামুন। বারবার বলার পরও রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন শাহেদ। সাজান মামুনকে হত্যার পরিকল্পনা। সে অনুযায়ী, গত ৬ জুলাই রাতে মামুনকে ফোন করে ডেকে নেন শাহেদ। কক্সবাজার শহরের বাজারছড়া বাজারে আসলে তার মোটরসাইকেলের পেছনে বসে রওনা দেন ঈদগাঁও উপজেলার কালিরছড়া বাজারের দিকে। সেখানে পৌঁছলে সন্ত্রাসী শাহীন ওরফে লালু ডাকাতের লোকজন মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। এরপর পরিকল্পনামতো ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা মামুনের কাছ থেকে ফোনটি নিয়ে শাহেদের হাতে তুলে দেন। এরপর শাহেদ মোটরসাইকেল নিয়ে কক্সবাজার ফেরেন। সন্ত্রাসীরা মামুনকে হত্যা করে রশি দিয়ে হাত–পা বেঁধে মরদেহ রেললাইনের পাশে ফেলে রাখে। গভীর রাতে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা শাহেদের ফোনে কল দিয়ে বলে, ‘খেলা শেষ’।

র‍্যাব জানায়, মামুনকে খুন করার জন্য এক লাখ টাকায় সন্ত্রাসী ভাড়া করেন শাহেদ। এ হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত ছিল কিনা- তা জানার চেষ্টা চলছে। শাহেদ কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার মাছুয়াখালী সিকদারপাড়ার মতিউর রহমানের ছেলে। তিনি থাকতেন কক্সবাজার শহরে।

রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান বলেন, নিহত মামুনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল না। সম্ভবত শ্বাসরোধ করে মামুনকে হত্যার পর হাত-পা বেঁধে লাশ রেললাইনের পাশে ফেলা হয়। শাহেদকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আর কে কে জড়িত, তা জানতে তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।


এএফ/০২