কোম্পানীগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে আহত ১৩, মামলার আসামি ২১

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪
০২:০৭ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪
০২:০৭ পূর্বাহ্ন



কোম্পানীগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে আহত ১৩, মামলার আসামি ২১


সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের টুকেরবাজার এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছে যে কোন সময় এ ঘটনায় নিয়ে আবারও সংঘাত হতে পারে। 

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানায় ২১ জনের নাম উল্লেখ্য ৭০ থেকে ৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা রেকর্ড হয়েছে। সংঘর্ষে আহত নুর আহাম্মদের ছেলে শামীম আহমদ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জের টুকেরবাজার পয়েন্টে গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় টুকেরবাজারের দারু মিয়ার ছেলে খায়েস মিয়ার সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ইসলামপুর গ্রামের মৃত রতন মিয়ার পুত্র মোহনের হাতাহাতি ও বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি তৎক্ষণিক মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহতরা হলেন, খায়েস মিয়া (৪০), নুর মোহাম্মদ (৪৫), তার পুত্র শাহিন (২৫), রুহুল আমিন (২৮), চমৎকার বেগম (৭০), তাহমিনা (২৪), হাসমত আলী (৪৫), মুন্না মিয়া (২৪), নাঈম আহমদ (২৫), ওয়াহিদ মিয়া (৫০), অলিউর (২৫) ও মাসুক মিয়া (৪৫), মোহন মিয়া (২৫)।

তাদের মধ্যে মাসুক মিয়া, চমৎকার বেগম, নুর মোহাম্মদ,  শাহিন ও মোহন মিয়ার অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। আহতরা ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় অপরপক্ষের আহতের ভাই রিয়াজ মিয়া বাদী হয়ে আরোও একটি অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগটি থানায় রেকর্ডের প্রস্তুতি চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

মামলার অভিযোগপত্রে বাদী শামীম আহমদ উল্লেখ্য করেন তাঁর চাচা খায়েস মিয়া টুকের বাজারস্থ তিন ভাই রেস্টুরেন্টের সামনে পান বিক্রি করে। আসামী মোহন মিয়া তিন ভাই রেস্টুরেন্টে ফিল্টারের পানি সরবরাহ করে। তিন ভাই রেস্তোরাঁয় পানি সরবরাহ নিয়ে রেস্টুরেন্টের কর্মচারীর সাথে মোহন মিয়ার তর্কবিতর্ক হয়। 

এ নিয়ে খায়েস মিয়া মোহনের মধ্যে জামেলার দৃষ্টি হলে রাত ৯টায় মামলায় উল্লিখিত আসামীরা সহ অজ্ঞাতনামা ৭০/৮০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে খায়েস মিয়া সহ আহতদের উপর আক্রমণ করলে কয়েকজন গুরুতর আহত সহ ১১ জন আহত হয়। এ সময় আসামীরা বাড়ি-ঘর ও দোকানপাটে হামলা করে ভাংচুর কয়েক লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ লুটপাট করে।

আহত মাসুক মিয়া ভাই মাহফুজ আহমদ জানান, তিন ভাই রেস্তোরাঁয় পানি সরবরাহের একটি বিষয় নিয়ে  তর্কবির্তক হয় মোহন মিয়া ও রেস্তোরাঁর কর্মচারীর মধ্যে। এক পর্যায়ে খায়সে মিয়া রেস্তোরাঁর লোকজনের পক্ষে নিয়ে মোহনকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। এসময় আমার চাচাতো ভাই হৃদয় মোহনকে বাঁচাতে গেলে তার উপর আক্রমণ করে। ঘটনার খবর পেয়ে আমি সহ আমার ভাইয়েরা এবং স্থানীয়রা দুই পক্ষকে থামিয়ে মিমাংসার আলোচনা করে চলে যায়। তার কিছু সময় পর আমার ভাই মাসুক মিয়ার বাড়িতে হামলা করে মাসুক মিয়ার ও তার ছেলে গুরুতর আহত করে। এই খবর পেয়ে আমার আত্মীয়স্বজনেরা ঘটনাস্থলে এলে দুই পক্ষের মাঝে মারামারি হয়। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ বদিউজ্জামান ও পুলিশ সদস্যদের উপাস্থিতিতে মারামারি বন্ধ হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ঘটনার পর সালিশ বিচারের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা বিচার না মেনে ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিল না তাদের অনেককেই আসামী করে মামলা করেছে আমরাও মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। 

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ বদিউজ্জামান জানান, পানি সরবরাহের একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৩ আহত আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এঘটনায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আরেকটি অভিযোগ থানায় আছে এটিও রেকর্ডের প্রস্তুতি চলছে।



এএফ/০২