সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার অসিতের অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪
০৭:১৫ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪
০৯:৩৬ অপরাহ্ন



সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার অসিতের অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর


দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারীতা, নারী শ্লীলতাহানি, শিল্পী-সম্মানী আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ এনে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশ গুপ্তের অপসারণ দাবি করেছে সিলেটের ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’। এ দাবিতে তারা গণ স্বাক্ষর অভিযান শুরু করেছেন। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে তারা স্মরকলিপিসহ গণস্বাক্ষরের কপি হস্তান্তর করবেন। 

বিষয়টি সিলেট মিররকে নিশ্চিত করেছেন গণস্বাক্ষর কর্মসূচির অন্যতম সমন্বয়ক কবি, নাট্যকার সুফি সুফিয়ান। তিনি বলেন, ‘আমরা গণ স্বাক্ষর সংগ্রহ করছি। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে সিলেট জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিসহ গণস্বাক্ষরের কপি হস্তান্তর করা হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি মহাপরিচালক এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রনালয়ে প্রতিলিপি পেশ করা হবে ‘

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশ গুপ্ত শুরু থেকেই নানান অনিয়ম দুর্নীতি করে আসছেন। তার স্বেচ্চাচারী ও ঔদ্যতপূর্ণ আচরণের জন্য ২০১৬ সালে শিল্পকলার সকল প্রশিক্ষক কর্মবিরতিতে গিয়েছিলেন। সেখানে ছিলেন সংগীত গুরু হিমাংশু বিশ্বাস, প্রবীণ চিত্রশিল্পী অরবিন্দ দাস গুপ্ত, গীতবিতান বাংলাদেশ সিলেটের অধ্যক্ষ ও সংগীত প্রশিক্ষক অনিমেষ বিজয় চৌধুরীসহ প্রায় নয়জন। যাঁদের প্রত্যেকেই তাঁদের কর্মপরিধিতে বিখ্যাত। তাঁদের সাফ ঘোষণা ছিল-‘অসিত বরণ দাস গুপ্তের ব্যক্তিগত আচরণ, অফিসার সুলভ হম্বিতম্বি সুষ্ঠু অফিস পরিচালনায় ব্যর্থ।’

এই ঘটনা সিলেট সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাকে নিয়ে আন্দোলন মানববন্ধনসহ নানান কর্মসূচি পালন করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে সাময়িকভাবে হবিগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বদলি হলে কিছুদিন পর পুনরায় পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়। ফলে তার দাম্ভিকতা আর অহংকারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সাম্প্রদায়িক আচরণ, নারী শ্লীলতাহানি, শিল্পী-সম্মানী আত্মসাৎ ও ভীতিপ্রদর্শন থেকে শুরু করে নাট্যকর্মীদের শিল্পকলা একাডেমির হল বুকিং না-দেওয়ার নানা অভিযোগ আছে তার উপর। এবং তার একচ্ছত্র আধিপথ্যের কারণে কোনও সাংস্কৃতিকর্মী শিল্পকলা অডিটোরিয়াম ব্যবহারের সুযোগ পেত না, শুধু তার পেটুয়া বাহিনী ছাড়া। সিলেট শহরের প্রধান অডিটোরিয়াম প্রায় বিকল হবার পরও শিল্পকলায় কোন সাংস্কৃতিককর্মী যেখানে প্রোগ্রাম করার সুযোগ পেতেন না। বেশ কয়েকটা পত্রিকায় তার ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে নিউজও হয়েছে। মামলা হয়েছে জালালাবাদ থানায়ও (জিডি নম্বর ৫৮৯)।

এসব দাবি তুলে তারা অসিত বরণ দাশ গুপ্তকে সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলার কালচারাল অফিসার পদ থেকে অপসারণ করার আহ্বান করেন। তাদের দাবি, নতুন অফিসার নিয়োগ দিয়ে সিলেট সংস্কৃতির সুষ্ঠু পরিবেশ পুনরায় ফিরিয়ে আনা অত্যাবশ্যক। 

সিলেট জেলার সংস্কৃতিকর্মী, সংবাদকর্মী, লেখক, বুদ্ধিজীবী এবং সচেতন নাগরিকগণ এ দাবিতে গণস্বাক্ষর করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-কথাকলি থিয়োটারের সভাপতি শামসুল বাসিত শোরো, নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক আবদুল করিম কিম, সাংবাদিক উজ্জ্বল মেহেদী, নাট্যপরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উজ্জ্বল দাস, কবি ও প্রকাশক শামস নুর, নাট্যকর্মী নীলাঞ্জন দাশ টুকু, প্রকাশক রাজীব চৌধুরী, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী রাজিব রাসেল, নাট্যশিল্পী  উজ্জ্বল চক্রবর্তী, আলোকচিত্রশিল্পী বাপ্পী ত্রিবেদী, নাট্যকর্মী অপু মজুমদার,  নাট্যকর্মী অরূপ বাউল, নাট্যকর্মী রনি দাস,  নাট্যকর্মী রাজেশ্বরী বনিক,  আলোকচিত্রশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী দেবর্ষী চক্রবর্তী, সংস্কৃতিকর্মী অচ্যুত চক্রবর্তী বর্ষণ, সংগীতশিল্পী সোনিয়া তালুকদার, কবি মালেকুল হক, গবেষক বিজিৎ দেব, জারুল সম্পাদক ও নারী এক্টিভিস্ট  কাজী জিননুর,  নাট্যকার সুফি সুফিয়ান, কবি জয় ভট্টাচার্য্য, কবি লিটন লিটু, কবি ও প্রাবন্ধিক ওয়াহিদ রোকন, গবেষক বিজিৎ দেব, নাট্য-নির্দেশক আবদুল্লাহ আশরাফ, কবি গীতিকার মেঘদাদ মেঘ, শিক্ষক ও গবেষক আবদুল লতিফ, প্রকাশক কামরুল আলম, প্রকাশক লুৎফুর রহমান তোফায়েল, সংগীত পরিষদের সদস্য মামুন পারভেজ, সাংবাদিক মুনশি ইকবাল, নাট্যকর্মী মামুন খান, গল্পকার ও সংগঠক সাখাওয়াত হোসেন শাকিল, প্রাবন্ধিক আনোয়ারুল ইসলাম,  ছড়াকার শাহাদত বখত শাহেদ, কবি  মো. সুয়েজ হোসেন, দুলাল শর্মা চৌধুরী,  সংস্কৃতিককর্মী ফারদিন লিয়াকত অপুর্ব, চলচ্চিত্র নির্মাতা লায়েক আহমদ পবন, নাট্যকর্মী পপি দেসহ শতাধিক নবীণ ও প্রবীণ ব্যক্তি।


এএফ/০৬