সিলেট ও সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক


সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
০৫:৪৯ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
০৬:২২ অপরাহ্ন



সিলেট ও সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু


সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার ৬ উপজেলার পৃথক স্থানে বজ্রপাতে ৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আজ ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বজ্রপাতে তারা প্রাণ হারান। এর মধ্যে সিলেট সদর উপজেলা, বিশ্বনাথ ও কোম্পানীগঞ্জে একজন করে এবং সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলায় ২ জন, জামালগঞ্জ ও ছাতকে একজন করে নিহত হন। 

নিহতরা হলেন সিলেট সদর উপজেলার ৪ নম্বর খাদিমপাড়া ইউনিয়নের কাটিমারা গ্রামের আনছার আলী (৬২), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের কনু মিয়ার ছেলে মাসুক আহমেদ (৪১), বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের সাড়ইল গ্রামের ওলিউর রহমানের ছেলে ও এমসি কলেজের শিক্ষার্থী রেদওয়ান আহমদ (২২), সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পলিরচর গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া (৩০), একই গ্রামের নুরুল হকের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৮), জেলার জামালগঞ্জে ভোর রাতে আরেক বজ্রপাতের ঘটনায় শরিফ মিয়া (৩৫) ও জেলার ছাতক উপজেলার ৩ নম্বর সদর ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা সুন্দর আলী।

আজ রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এসব উপজেলায় বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।

নিহত মাসুক সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের কনু মিয়ার ছেলে এবং  রেদওয়ান বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের সাড়ইল গ্রামের ওলিউর রহমানের ছেলে ও সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ কলেজের (এমসি কলেজের) শিক্ষার্থী ছিলেন।

এ সংক্রান্ত পূর্বের সংবাদ:

জানা যায়, আনছার আলী রবিবার বেলা ১১ টার দিকে পাশের একটি বিলে মাছ ধরতে যান। এ সময় বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। বর্তমানে তার লাশ পোস্টমর্টেম ছাড়া দাফন করতে পরিবারের পক্ষ থেকে (এডিএম) বরাবরে আবেদন করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে একজন মারা গেছেন। লাশ পোস্টমর্টেম ছাড়া দাফন করতে তার পরিবার কোর্টে আবেদন করেছেন। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

নিহত মাসুকের স্বজনরা জানান, রবিবার ভোর সাড়ে ৭টায় মাসুক বাড়ির পাশের হাওরে গরুর জন্য ঘাস কাটতে যান। সকাল ১০টার দিকে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান।

তিনি জানান, ‘খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। পরিবার চাচ্ছে বিনা-তদন্তে লাশ দাফন সম্পূর্ণ করতে, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করছি। আইননুসারে পরবর্তী কার্যক্রম চলমান।’

এদিকে রেদওয়ানের স্বজনরা জানান, ভোরে বাড়ির পাশের পুকুরে মাছ ধরেতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান রেজওয়ান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুবেল মিয়া।

 সুনামগঞ্জ জেলার তিন উপজেলায় চারজন বজ্রপাতে নিহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাতটায় দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পলিরচর গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া (৩০) ও একই গ্রামের নুরুল হকের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৮) বাড়ির পাশের হাওরে মাছ ধরতে যায়। এ সময় বজ্রপাতের ঘটনায় মৃত্যু ঘটে তাদের।

জেলার জামালগঞ্জে ভোর রাতে আরেক বজ্রপাতের ঘটনায় শরিফ মিয়া (৩৫) নামের আরেক জেলের মৃত্যু ঘটেছে।

তিনি উপজেলার কালাগোজা গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে। বাড়ির পাশের নয়া হাওরে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতের ঘটনায় এই জেলে মারা যান।

এ ছাড়াও ছাতক উপজেলার ৩ নম্বর সদর ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা সুন্দর আলী নামে আরেক জেলে মারা গেছেন। বাড়ির পাশের হাওরে সকালে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে শিকার হন তিনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন বলেন, ৩ উপজেলায় বজ্রপাতে ৪ জন জেলে মারা গেছেন। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।



এএফ/০২