বিশ্বনাথে মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের প্রবেশকে ঘিরে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ : আহত ১৫

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি


অক্টোবর ১৮, ২০২৪
০২:৫২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ১৮, ২০২৪
০২:৫৩ পূর্বাহ্ন



বিশ্বনাথে মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের প্রবেশকে ঘিরে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ : আহত ১৫


দু’দফা ছুঠি কাটানোর ২মাস ১৪দিনের মাথায় সিলেটের বিশ্বনাথ দারুল উলুম ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ নু’মান আহমদ প্রবেশ করা নিয়ে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়। এতে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মাদ্রাসার ৮শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১৫জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পবিার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টারদিকে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। 

গুরুতর আহত অবস্থায় মাদ্রাসার কামিল প্রথম বর্ষের ছাত্র হাফিজ গিয়াস উদ্দিন, ফাজিলের ছাত্র পারভেজ আহমদ, আব্দুস সামাদ, মিনহাজুর রহমান এবং আলিম ২য় বর্ষের ছাত্র আবিদুর রহমানকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর সুরত মিয়া, ছালিক মিয়া, জলাল মিয়া, সাইদুল ইসলামসহ আহত বাকি ৭জন উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসনা নিয়েছেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, গত ৫ আগষ্ট দেশের পট পরিবর্তন হওয়ার পর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নু’মান আহমদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্র-জনতা। লাগাতার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত ২৭ আগষ্ট সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে অধ্যক্ষ নু’মান’র পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন সচেতন ছাত্র-জনতা। এসময় নানা দুর্নীতি উল্লেখ করে শ্লোগানও দেন তারা। আর নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ এনে ওইদিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগও দেন তারা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ওইদিন বিকেলে পদত্যাগ না করে ভাইস-প্রিন্সিপাল মাওলানা নাজিম উদ্দিনের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে স্বেচ্ছায় ছুটিতে যান অধ্যক্ষ নু’মান আহমদ। এনিয়ে ছাত্র-জনতার অভিযোগের বিষয়টি তদন্তাধীন থাকলেও ছুঠি শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার স্বপদে ফিরতে মাদ্রাসায় গিয়ে অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করতে চান নু’মান। এতে বাকবিতন্ডা ও বাধার পর সংঘর্ষ হলে পাঁচ ছাত্রসহ ১০জন আহত হন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মারামারির খবর পেয়ে বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুনন্দা রায় মাদ্রাসার দুই বিবদমান গ্রুপের দুই শিক্ষককসহ তাদের পক্ষের লোকজনকে নিয়ে উপজেলা প্রশাসনিক মিলনায়তনে বৈঠকের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছেন। এছাড়া ফের সংঘর্ষ না হাওয়ার জন্যেও সতর্ক করে দিয়েছেন। এসময় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন অধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।

তবে, মিডিয়ায় কোন মন্তব্য করতে চাননি অধ্যক্ষ নু’মান আহমদ। আর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা নাজিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছেন, অধ্যক্ষ নু’মান আহমদ জোরপূর্বক মাদ্রাসায় প্রবেশ করে দায়িত্ব নিতে চাইলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বিশ^নাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুবেল মিয়া এ-প্রতিবেদককে বলেন, মাদ্রাসার সংঘর্ষের বিষয়টি আমরা (পুলিশ) গুরুত্বসহকারে দেখছি। অভিযোগ দেওয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুনন্দা রায় এ-প্রতিবেদককে বলেন, প্রাথমিকভাবে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু মারামারির ঘটনা তো-তাই আইনীভাবেই মিমাংশা করা হবে। বহিরাগতদের অনধিকার প্রবেশ বন্ধে কিছু দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পরিচায়পত্র প্রদানসহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।



এএফ/০৩