জৈন্তাপুরে কৃষক-ক্রেতার মেলবন্ধন ব্যতিক্রমী ‘মুক্ত বাজার’

মো. রেদওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর


নভেম্বর ২৭, ২০২৪
১১:৩৯ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৯, ২০২৪
০২:৫২ পূর্বাহ্ন



জৈন্তাপুরে কৃষক-ক্রেতার মেলবন্ধন ব্যতিক্রমী ‘মুক্ত বাজার’


বাড়ির আঙিনায় সবজি কিংবা বাড়ির ছোট্ট পুকুরে চাষ করা মাছ ক্রেতাদের কাছে সরাসরি বিক্রি করবেন কৃষক। মাঝখানে কোনো মধ্যস্বত্ত্বভোগী ঢুকার সুযোগ থাকবে না। সে চিন্তা থেকে সিলেটের জৈন্তাপুরে চালু হয়েছে ব্যতিক্রমী ‘মুক্ত বাজার।’ এ বাজারে ব্যবসা করলেও বিক্রেতাদের কোনো ভাড়া দিতে হবে না।  

জৈন্তাপুর উপজেলার জৈন্তেশ্বরী বাড়ির মাঠে গতকাল মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে এই ‘মুক্ত বাজার’ কার্যক্রম। প্রথমদিনে বাজারে শীতকালীন সবজির ছোট ছোট পসরা নিয়ে হাজির হন কৃষকরা। ক্রেতারাও আগ্রহ নিয়ে কম মূল্যে কেনেন বাগানের টাটকা সবজি। প্রথমদিন সবজিই উঠেছে বেশি। তবে পরবর্তীসময়ে এ বাজার থেকে ক্রেতারা বাড়ির পুকুরের মাছ, ঘরে হাতে তৈরি কারুপণ্য, খাবারসহ নানা জিনিস কিনতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সকালে মুক্ত বাজারে প্রথম ক্রেতা হিসেবে শীতকালীন সবজি কিনেন জৈন্তাপুর সদর এলাকার বাসিন্দা বদরউদ্দিন আহমদ পারভেজ। তিনি সন্তুষ্টি নিয়ে বলেন, ‘ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। বাজারের তুলনায় অনেক কম দামে টাটকা সবজি কিনছি। সপ্তাহে একাধিক দিন বাজার চালু হলে আমরাও লাভবান হবো, কৃষকরাও হবেন।’

দোলাচল থেকে প্রথমদিন কম মাছ নিয়ে এসেছিলেন মৎস ব্যবসায়ী রুক্কিনী বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘নদীর কিছু মাছ এনেছিলাম। এক ঘন্টারও কম সময়ে বিক্রি হয়ে গেছে।’


সকাল ১০টার দিকে মুক্ত বাজার পরিদর্শনে আসেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া। এরকম উদ্যোগের চিন্তা প্রসঙ্গে তিনি সিলেট মিরর-কে বলেন,  ‘মধ্যস্ততাকারীদের কারণে পণ্যের দাম বাড়ে। কৃষক যদি সরাসরি ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করেন তাহলে পাইকারি দরের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন। পাশাপাশি ক্রেতাও বাজারের তুলনায় সস্তায় কিনতে পারবেন। উভয় পক্ষ লাভবান হবেন। মূলত এ চিন্তা থেকে এটি করেছি।’

তিনি বলেন, ‘যারা অল্প পরিসরে বাড়ির আঙ্গিনায় শাকসবজি চাষ করেন, ছোট্ট পুকুরে মাছ চাষ করেন তারা সরাসরি বিক্রির সুযোগ পেলে ভোক্তারা কমদামে স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য পাবেন। মাঝখানে মধ্যস্থতাকারী ঢুকার সুযোগ থাকবে না। মুক্ত বাজারে তারা সহজে সরাসরি পণ্য বিক্রি করবেন। এজন্য কোনো ভাড়াও লাগবে না। এক কথায় নিজের পণ্যের নিজেই বিক্রেতা।’

জনগণের ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমদিনে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই খুব আগ্রহ দেখালেন। আমরা এটি সপ্তাহে একদিন চালুর পরিকল্পনা করলেও তাদের অনুরোধে সপ্তাহে দুইদিন করার চিন্তাভাবনা করছি।’

মুক্ত বাজারে কি কি পণ্য বিক্রি হবে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখানে বাড়ির আঙিনার সবজি, পুকুরের মাছের পাশাপাশি হাতে তৈরি কারুপণ্য বিক্রিও করতে পারবেন বিক্রিতো। ধরুন একজন ঘরে বসে কাঁথা সেলাই করলেন। চাইলে তিনি এখানে এনে বিক্রি করে যেতে পারবে। এখানে পণ্য বিক্রির টাকায় পরিবারের অন্য চাহিদা পূরণ করতে পারবেন।’



এএফ/০১