নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারি ০৪, ২০২৫
০৪:১৭ অপরাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ০৪, ২০২৫
০৪:১৭ অপরাহ্ন
বর্নিল আয়োজন আর বিশিষ্টজনদের স্মৃতিচারণে নিজেদের পথচলার অর্ধ শতাব্দি উদযাপন করেছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ছাপা প্রতিষ্ঠান ‘চলন্তিকা প্রিন্টার্স।সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘চলন্তিকা প্রিন্টার্সের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন সিলেটের জন্য অনেক গৌরবের ব্যাপার। অনেক ইতিহাসের সাক্ষী চলন্তিকা প্রিন্টার্স। ‘
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় নগরের একটি অভিজাত রেস্তোরায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠান চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে বিভিন্ন শেণি-পেশার মানুষ এবং সুধীজনের সম্মিলন ঘটে। চলন্তিকার এই পথচলার স্মৃতিচারণ করেন তারা।
চলন্তিকা প্রিন্টার্সের সত্ত্বাধিকারী সমাজসেবী জ্যোতির্ময় সিংহ মজুমদার চন্দনের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষক-সাংবাদিক সঞ্জয় কুমার নাথ ও বাচিক শিল্পী শাশ্বতী ঘোষ সোমার যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উদ্বোধকের বক্তব্য দেন সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রমের সম্পাদক শ্রীমৎ স্বামী চন্দ্রনাথানন্দজী মহারাজ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দৈনিক সিলেট মিরর পত্রিকার সম্পাদক ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আহমেদ নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী এবং প্রবীণ সাংবাদিক রফিকুর রহমান লজু।
সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে প্রকাশিতব্য স্মারকগ্রন্থের উপর আলোকপাত করে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডক্টর আবুল ফতেহ ফাত্তাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘চলন্তিকা প্রিন্টার্স সিলেটের একটি রুচিশীল ছাপাখানা। একসময় এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক ছিল। বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে প্রচারপত্র, স্মরণিকা প্রকাশের জন্য সেখানে যেতে হয়েছে। সেই হাতে কম্পোজের যুগ থেকে চলন্তিকা প্রিন্টার্স এখন আধুনিক ছাপাখানা। আমার প্রত্যাশা, এর অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রকৌশলী আলোময় বিশ্বাস, ব্যাংকার সৌমিত্র মজুমদার শুভ, প্রেসের পুরনো স্টাফদের পক্ষে স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন সহকারী ম্যানেজার বিনয় ভূষণ তালুকদার, কম্পিউটার অপারেটর আফিয়া খাতুন, মেশিনম্যান মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ প্রমুখ।
শুরুতেই কেক কেটে ও ৫০টি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন অতিথিবৃন্দ। নৃত্যরথের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীবৃন্দ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরমা সিংহ মজুমদার। সংগীত পরিবেশন করেন প্রভাতী সিংহ মজুমদার, প্রদীপ কুমার দে, সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন সংগীত নিকেতনের শিল্পীবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানটির সত্ত্বাধিকারী জ্যোতির্ময় সিংহ মজুমদার চন্দন প্রেসের সুদীর্ঘকালের কর্মময় জীবনের কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে উপেন্দ্র-বীণাপানি স্মৃতি পরিষদের সম্মাননা, বৃত্তি প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য চিত্র নির্মাতা, নাট্যজন নিরঞ্জন দে যাদু। বাচিক শিল্পী সুকান্ত গুপ্ত ও অর্চিতা ভট্টাচার্য্যরে যৌথ সঞ্চালনায় সিলেটের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস, বিশিষ্ট লেখক-অনুবাদক মিহির কান্তি চৌধুরী ও বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী রানা কুমার সিনহা-কে গুণীজন সম্মাননা ক্রেস্ট ও ২৫ হাজার টাকার চেক প্রত্যেককে প্রদান করা হয়। সংবর্ধিত অতিথিত্রয় অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। সুবিধাবঞ্চিত পাত্র সম্প্রদায়ের ৯ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৫ হাজার টাকা করে উপেন্দ্র-বীণাপানি স্মৃতি বৃত্তি প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সংগীত ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন আনন্দলোক, গীতবিতান, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ সিলেট, শ্রুতি সিলেট ও নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদ। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন বাচিক শিল্পী জ্যোতি ভট্টাচার্য্য। একক সংগীত পরিবেশন করেন হিমাংশু বিশ্বাস, রানা কুমার সিনহা, অনিমেষ বিজয় চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রিন্টার্সের সত্ত্বাধিকারী জ্যোতির্ময় সিংহ মজুমদার চন্দকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন মহালয়া উদযাপন পারিষদ শ্রীহট্ট ১৪৩১ বঙ্গাব্দের নেতৃবৃন্দ, মানব সেবায় নিবেদিত সংগঠন সিলেট বিবেক সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে সিলেটের বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ সহ নানা শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে মনোময় করে তুলেন। শেষে নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
এএফ/০৬