সিলেটের প্রতি উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদে লন্ডনে প্রবাসীদের বিক্ষোভ সমাবেশ

লন্ডন সংবাদদাতা


অক্টোবর ১৭, ২০২৫
০৪:৫১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ১৭, ২০২৫
০৫:১৪ পূর্বাহ্ন



সিলেটের প্রতি উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদে লন্ডনে প্রবাসীদের বিক্ষোভ সমাবেশ
এক মাসের মধ্যে দাবি না মানলে প্রয়োজনে রেমিটেন্স, বিমান বয়কটের ডাক


সিলেটের প্রতি সরকারের উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদে এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভয়াবহ দুরবস্থার প্রতিবাদে, রেল লাইনের উন্নয়নসহ বিভিন্ন দাবিতে লন্ডনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন সেখানে বসবাসরত প্রবাসী সিলেটিরা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত সিলেট আজ অবহেলা, দীর্ঘসূত্রতা ও প্রশাসনিক গাফিলতির এক বেদনাদায়ক অধ্যায়ে অবস্থান করছে। এমন বৈষম্যমূলক আচরণ অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক।’


বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বিকাল ৬টায় লন্ডনের ঐতিহাসিক আফতাব আলী পার্কে  এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের আয়োজন করে যুক্তরাজ্যবাসী সিলেট প্রবাসী সমাজ। এতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী, তরুণ-তরুণী, শিক্ষার্থী ও কমিউনিটি নেতারা অংশগ্রহণ করেন।

তারা চোখ বেঁধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান, যার মাধ্যমে তারা সিলেটের প্রতি সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ প্রকাশ করেন।

কে.এম আবু তাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মো. আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশের শুরুতে ছয় দফা দাবির উপর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইফতেকার সিদ্দিকী ইফতি।




সমাবেশে বক্তব্য দেন—আব্দুল মুকিত, তাজুল ইসলাম, সাইদুজ্জামান সুমন, আব্দুর রব, জাকির চৌধুরী, আব্দুল বাছিত রাফি, আফছার আহমদ, মিজান ওয়াহিদ, শাহীন আলম সানী, মামুন আহমদ, আসাদুজ্জামান শাফী, ফয়েজ আহমদ, ইলিয়াস হোসেন, সুমন আহমদ এবং সাংবাদিক জাহাঙ্গীর হোসেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘তিন বছর আগে যে ছয় লেন প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে আধুনিক করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, আজ পর্যন্ত তার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। গর্তে ভরা রাস্তা, অবিরাম যানজট, দুর্ঘটনা আর ধুলাবালিতে ঢাকা পথ আজ মানুষের জীবনে পরিণত হয়েছে এক নিত্যদিনের যন্ত্রণায় ‘ এর প্রভাব পড়ছে দেশের পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে পড়ছে বলে এসময় তারা মন্তব্য করেন। 

বক্তারা আরো বলেন, ‘সিলেট বাংলাদেশের অন্যতম রেমিট্যান্স কেন্দ্র—প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির বড় অংশ বহন করেন। অথচ সেই প্রবাসীরাই দেশে ফিরে যখন নিজ পরিবারের কাছে পৌঁছাতে পারেন না, তখন সেটি শুধু অব্যবস্থাপনা নয়, অপমানও বটে।’


বৈষম্য নিরোধে ও সিলেটের উন্নয়ন ও নাগরিক ভোগান্তি নিরসনে তুলে ধরা ছয়টি দাবিগুলো হচ্ছে—১. ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয় লেন প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে, ২. প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও তদারকি নিশ্চিত করতে হবে, ৩. শিক্ষার্থী, রোগী, পর্যটক ও প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করতে হবে, ৪. ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তর করতে হবে, ৫. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বিকল্প পরিবহন রুট (ট্রেন ও নৌপথ) চালু করতে হবে, ৬. পর্যটন খাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিশেষ প্রণোদনা ও অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।

বক্তারা সতর্ক করে বলেন—যদি সময়মতো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে সিলেটবাসী ন্যায্য অধিকার আদায়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

এসময় তারা ম্লোগান দেন— “সিলেট উন্নয়ন চাই—কাগজে নয়, রাস্তায়; প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবে!”


ইএস-০১/এএফ-০১