ফেঞ্চুগঞ্জে অবাধে আসছে ট্রাক, করোনার আতঙ্কে স্থানীয়রা

শহীদ আহমদ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ


এপ্রিল ১৩, ২০২০
১০:৫৩ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০২০
১০:৫৩ অপরাহ্ন



ফেঞ্চুগঞ্জে অবাধে আসছে ট্রাক, করোনার আতঙ্কে স্থানীয়রা

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (এসএফসিএল) এলাকায় বাইরের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ এবং লোকজন যেন বাইরে থেকে আবাসিক এলাকায় প্রবেশ না করে সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন একজন শ্রমিক। স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেছিলেন সার কারখানা আবাসিক এলাকার প্রবেশমুখের ফটক বন্ধ করে দিতে, যাতে বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করতে না পারে।

তিনি আরও লিখেন, এর আগে ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারে প্রবেশমুখের ফটক বন্ধ করা হয়েছে প্রায় মাসখানেক আগে। বিশেষ প্রয়োজনে কেউ বাজারে প্রবেশ করতে গেলে তার গাড়ি ফটক খুলে প্রবেশ করিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। 

করোনা সচেতনতা থেকে এমনটা লিখেছিলেন ওই শ্রমিক। কিন্তু কারখানার সকালের শিফটের পরে শ্রমিকরা যখন বাজারে আসেন, তখন আর তাদের মধ্যে সচেতনতা দেখা যায় না। একজন আরেকজনের গায়ে পড়ে পণ্য কিনতে ব্যস্ত থাকেন।

বাইরে থেকে যাতে অন্য এলাকার লোক ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য আবাসিক এলাকার দক্ষিণপাশের ফটক বন্ধ রয়েছে সপ্তাহখানেক ধরে। যার ফলে ছোট-বড় কোনো গাড়ি কারখানা এলাকায় প্রবেশ করতে পারছে না। অথচ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সার বহনকারী গাড়ি আসছে কারখানার ভেতরে। এ নিয়ে কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যদিও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সিলেট জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গত শনিবার (১১ এপ্রিল) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম এই ঘোষণা দিয়েছেন।

অবরুদ্ধ (লকডাউন) থাকাকালে সড়ক, মহাসড়ক ও নৌপথে কোনো যানবাহন অন্য কোনো জেলা থেকে সিলেট জেলায় প্রবেশ করতে পারবে না এবং সিলেট থেকে অন্য জেলায় গমন করতে পারবে না। জেলার অভ্যন্তরে আন্তঃউপজেলায় একই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। কিন্তু ফেঞ্চুগঞ্জে অবাধে শাহজালাল সার কারখানায় সার বহন করা গাড়ি চলাচল করছে। এ নিয়ে স্থানীয় জনগণ ও কারখানার শ্রমিকরা আতঙ্কে আছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার কয়েকজন শ্রমিক বলেন, এই পরিস্থিতিতেও আমাদের কারখানা বন্ধ হয়নি। আমরা আতঙ্কের মধ্যে কাজ করছি। কারণ সার পরিবহনে যে গাড়িগুলো আসছে, সেগুলো বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে থাকে। নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, যশোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে গাড়ি আসছে। এমন অবাধ চলাফেরায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি। 

শাহজালাল সার কারখানার উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মিজানুর রহমান সিলেট মিররকে বলেন, কারখানা ২৪ ঘন্টা চালু রাখতে হয়। যেহেতু প্রোডাকশন আছে, তাই সার ডেলিভারি দিতে হয়। যার ফলে বিভিন্ন জায়গার গাড়িগুলো সার পরিবহনের কাজে আসে। এসব গাড়ি কারখানার মূল ফটকে স্প্রে করে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য আমরা মাস্কসহ কারখানার বিভিন্ন পয়েন্টে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রেখেছি।