পেটের টানে পথে

শহীদ আহমদ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ


এপ্রিল ১৫, ২০২০
১২:৫৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১৫, ২০২০
১২:৫৪ পূর্বাহ্ন



পেটের টানে পথে

ইব্রাহীম আলী সার কারখানা মাইজগাঁও রোডের একজন টমটম চালক। মোটামুটি ভালোই চলছিল তার ছোট্ট সংসার। কিন্তু দেশের করোনা পরিস্থিতিতে তার গাড়িটি বন্ধ আছে বেশ কয়েকদিন ধরে। হাতে যা টাকা-পয়সা ছিল, তা দিয়ে কোনোমতে এতোদিন চালিয়েছেন সংসার। কাউকে মুখ ফুটে বলতেও পারছেন না কিছু।

এ অবস্থা শুধু ইব্রাহীম আলীর নয়। স্থানীয় শাহজাহান, নয়ন, আমানসহ অনেক ব্যাটারিচালিত টমটম ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক পড়েছেন এই দুরবস্থায়। তাদের কারও পক্ষে মুখ ফুটে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না, কারও কাছে হাত পাতা সম্ভব হচ্ছে না। নিরূপায় হয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই আজ এসব টমটম ও অটোরিকশার চালক সংসারের বোঝা টানতে জীবনযুদ্ধে রাস্তায় নেমে গেছেন।

করোনায় বিশ্ব পরিস্থিতি থমকে গেছে, বন্ধ হতে বসেছে অর্থনীতি, ঘুরছে না গাড়ির চাকা। করোনা নামক এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সারা বিশ্ব আজ স্তব্ধ। এর ছোবল পড়েছে বাংলাদেশেও।

দেশে এই ভাইরাসের প্রার্দুভাব ঠেকাতে সরকার হার্ডলাইনে গিয়ে সবধরণের জনসমাগম বন্ধ রাখার জন্য গণপরিবহন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। এমন বাস্তবতায় মানুষ ঘরবন্দি। সর্বস্তরের কর্মজীবী মানুষ এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। নিম্ন আয়ের মানুষ ছুটছেন ত্রাণের খোঁজে। একইভাবে ব্যাটারিচালিত টমটম ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা আজ পরিবার নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

কর্মহীন হয়ে পড়ায় এসব মানুষের পক্ষে তাদের পরিবারের খাবার যোগাড় করা দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। ফলে সরকার ঘোষিত লকডাউনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এসব চালকরা। তারা লোকলজ্জায় কারও কাছে হাত পাততে পারছেন না। একবেলা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আজ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন।

এ প্রতিবেদককে তারা বলেন, আমাদের যা সঞ্চয় ছিল সব এতোদিন ঘরে বসে বসে খেয়ে ফুরিয়ে গেছে। কারও কাছ থেকে কোনো ত্রাণ বা সহযোগিতা পাইনি। আজ যদি সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, তবে আমরা গাড়ি বন্ধ করে ঘরে ফিরে যাব।

 

এসএ/আরআর