বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের ১১ শতাংশই স্বাস্থ্যকর্মী

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ০১, ২০২০
০৫:৫৯ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ০১, ২০২০
০৫:৫৯ অপরাহ্ন



বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের ১১ শতাংশই স্বাস্থ্যকর্মী

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত দেশে ৮৮১ জন স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসক ৩৯২ জন, নার্স ১৯১ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী ২৯৮ জন। যা মোট সংক্রমণের ১১ শতাংশ। এই হার বৈশ্বিক হারের চেয়ে সাত গুণ বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এমন সংক্রমণের কারণ জানার চেষ্টা করছে। 

জনস্বাস্থ্যবিদ ও গবেষকেরা মনে করছেন, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি, মানসম্পন্ন সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) ও মাস্ক না পাওয়া, প্রশিক্ষণের ঘাটতির কারণে স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একাধিকবার বলেছে, স্বাস্থ্যকর্মীরা এই মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের সামনের সারির যোদ্ধা। এদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে অন্য সবার সুরক্ষা ঝুঁকিতে থাকবে। 

সর্বশেষ ২৮ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, করোনা রোগী সেবার সঙ্গে জড়িত স্বাস্থ্যকর্মীরা ভাইরাস সংক্রমণ, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, মানসিক চাপ, কর্মক্লান্তি ও ভীতির ঝুঁকিতে আছেন। এ ছাড়া তাঁরা শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক সমস্যারও শিকার হচ্ছেন। এসব বন্ধে বিশ্বের সব দেশ এবং সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। ওই দিন তারা আরও বলেছিল, সারা বিশ্বে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীর সংক্রমণের তথ্য তারা পেয়েছে। ওই দিন পর্যন্ত সারা বিশ্বে আক্রান্ত ছিলেন ২৩ লাখ ৯৭ হাজার ২১৭ জন। অর্থাৎ তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। 

দেশে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ডবয়, আয়ার সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে করোনায় একজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকদের কেন্দ্রীয় পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সংক্রমিত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর নিয়মিত হিসাব রাখছে। 

বিএমএর মহাসচিব মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৮৮১ জন স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা শনাক্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসক ৩৯২ জন, নার্স ১৯১ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী ২৯৮ জন। বাংলাদেশে মোট সংক্রমিত হয়েছেন ৭ হাজার ৬৬৭ জন।

চিকিৎসক ও নার্স সংগঠনগুলোর তৎপরতার কারণে তাঁদের সংক্রমণের খবর বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর খবর সুনির্দিষ্টভাবে পাওয়া যায় না।

কোভিড–১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, এটা দুঃখজনক যে চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হচ্ছেন। সম্মুখ সারির সব কর্মীর পিপিই, কর্মঘণ্টা, বিশ্রাম, থাকা–খাওয়া, যাতায়াতসহ সব বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে আরও মনোযোগী হতে হবে। 

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি, মানসম্পন্ন পিপিই ও মাস্ক না পাওয়া, প্রশিক্ষণের ঘাটতির কারণে সংক্রমণ বেশি।

 

এনপি-০৫