মৌলভীবাজারে ৮৭ বছরের ঐতিহ্যে করোনার বাধা

সাইফুল্লাহ হাসান, মৌলভীবাজার


মে ২৭, ২০২০
১২:৫৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ২৭, ২০২০
১২:৫৮ পূর্বাহ্ন



মৌলভীবাজারে ৮৭ বছরের ঐতিহ্যে করোনার বাধা

প্রতিবছর ঈদে মৌলভীবাজার টাউন ঈদগাহ মাঠ জেগে ওঠে। কয়েকদিন আগে থেকেই চলে ঈদের নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি। ঈদের দিন সকালে মুসল্লিদের পদচারণায় মাঠ হয়ে ওঠে মুখরিত। স্থানীয় মানুষ তো বটেই, আশপাশের অনেক জায়গা থেকে অনেকে টাউন ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়তে আসেন। গতবছর ঈদেও এই মাঠে ঈদের ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তবে এবার ঈদে বদলে গেল সেই দৃশ্য। মৌলভীবাজার টাউন ঈদগাহ মাঠে যুগ যুগ ধরে ঈদের নামাজ আদায় করার সেই ঐতিহ্যে এবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল করোনাভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতি। ফলে সোমবার (২৫ মে) ঈদের সকালে ঈদগাহ ছিল নীরব, নিস্তব্ধ।

ইতিহাসখ্যাত জনপদ মৌলভীবাজার। মূল শহরেই রয়েছে শাহ মোস্তফা (রঃ) এর মাজার। মাজারের পাশেই ১৯৩২ সালে স্থাপিত হয় হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (রঃ) টাউন ঈদগাহ মাঠ। ঐতিহাসিক এই ঈদগাহে ১৯৩৩ সাল থেকে শুরু হয় ঈদের জামাত। সেই শুরু। এরপর ৮৭ বছরের ইতিহাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা প্রতিকুলতা সত্ত্বেও কখনও ঈদের নামাজ বন্ধ হয়নি। স্থানীয় প্রবীণ এবং বিশিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান জানান, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে টাউন ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত এবার হয়নি। প্রতিবছর ঐতিহ্য অনুযায়ী পৌরসভার আয়োজনে এখানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এবার সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদগাহ বা খোলা মাঠে ব্যাপক লোকসমাগমে ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে না। এ কারণে ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়নি।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন বলেন, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার জন্য জেলাবাসীকে অনুরোধ করেছি। সে অনুযায়ী মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মৌলভীবাজার শহরের প্রতিষ্ঠাতা মৌলভী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ'র বংশধর সৈয়দ শাহাব উদ্দিন আহমদ জানান, ১৯৩২ সালে খান বাহাদুর আব্দুল মজিদ কাপ্তান মিয়ার ছেলে ও ভাতিজারা মিলে এই ঈদগাহ নির্মাণ করেন। পরবর্তী সময়ে ঈদগাহ বর্ধিত হয়েছে। ১৯৩৩ সাল থেকে এখানে শুরু হয় ঈদের নামাজ আদায়। প্রথম ঈদের নামাজ পরিচালনা করেন বালিকান্দির বাসিন্দা মৌলভী সৈয়দ নজিবুদ্দিন আহমদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার কোনো উপজেলাতেই বড় পরিসরে ঈদগাহে ঈদের নামাজ হয়নি। গ্রামের মসজিদগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

 

এসএইচ/আরআর-০২