বিচারক হতে চায় মেধাবী মুক্তা, বাধা দারিদ্রতা

সজীব দেবরায়, কমলগঞ্জ


জুন ১৩, ২০২০
১২:১৭ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ১৩, ২০২০
১২:১৭ পূর্বাহ্ন



বিচারক হতে চায় মেধাবী মুক্তা, বাধা দারিদ্রতা

বাবার সঙ্গে মুক্তা

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী মুক্তা মল্লিক উচ্চশিক্ষিত হয়ে বিচারক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। তবে তার উচ্চশিক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবারের অভাব-অনটন।

মুক্তা এ বছর কমলগঞ্জের মুন্সীবাজার কালী প্রসাদ উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। মুক্তার বাবা দরিদ্র কৃষক ও মা গৃহিনী। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে মুক্তা মেঝো।

জানা যায়, মুক্তার বাবা মুন্সীবাজার ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের অবিনাশ মল্লিক একজন দরিদ্র কৃষক। মুক্তার বড় ভাই একটি সরকারি মেডিকেল এ্যাসিসটেন্স প্রশিক্ষণ স্কুলে (মেটস্) দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছে। বড় বোন মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজে ২০২০ সালের বিজ্ঞান বিভাগের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ছোট এক ভাই ৮ম শ্রেণিতে ও ছোট বোন ৫ম শেণিতে পড়ছে। দরিদ্র পরিবারের হলেও বর্তমানে সবাই লেখাপড়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া মুক্তা মল্লিক আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে একজন বিচারক হতে চায়। তবে সবজি বিক্রেতা দরিদ্র কৃষক বাবা তাকে বেশিদূর পড়াতে চাচ্ছেন না। যার পেছনে মূল কারণ দারিদ্রতা। তবে মুক্তার ইচ্ছা বড় ভাই ও বড় বোন যেভাবে নিজে টিউশনি করে নিজেদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছে, সেভাবে সেও একটি ব্যবস্থা করে নিজের লেখাপড়ার খরচ বের করবে। কষ্ট করে হলেও সে তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায়।

অদম্য মেধাবী মুক্তা মল্লিক জানায়, নিজের চেষ্টা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতা আর পরামর্শে পড়াশোনা করে সে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। পরে জেএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ ও এবার এসএসসিতেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকেও সে ভালো ফলাফল করে পরবর্তীতে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করতে চায়। তার লক্ষ্য একজন বিচারক হওয়ার। বিচারক হয়ে দেশ ও সমাজের সেবা করতে পারবে বলে তার বিশ্বাস।

মুক্তার বাবা অবিনাশ মল্লিক জানান, তিনি নিজের জমিতে সবজি চাষ করে ও কৃষিকাজ করে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ায় কিছুটা সহযোগিতা করেছেন মাত্র। তবে বড় ছেলে ও মেয়ে টিউশনি করে নিজেদের খরচ বের করে নিচ্ছে। এখন তৃতীয় সন্তান মুক্তার লেখাপড়ার খরচ নিয়ে তিনি চিন্তিত। তবে মেয়ে নিজেই অদম্য বলে সে পরবর্তীতে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায়। কেউ মানবিক বিবেচনায় সহযোগিতার হাত বাড়ালে তার মেয়ের এ ইচ্ছা পূরণে তা সহায়ক হবে বলে তিনি মনে করেন।

 

এসডি/আরআর-০৬