জগন্নাথপুরে সেতু নিয়ে দ্বন্দ্ব, চলাচলে জনদুর্ভোগ

আলী আহমদ, জগন্নাথপুর


জুন ২২, ২০২০
১০:৪০ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ২২, ২০২০
১০:৪২ অপরাহ্ন



জগন্নাথপুরে সেতু নিয়ে দ্বন্দ্ব, চলাচলে জনদুর্ভোগ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য সরকারি অর্থায়নে নির্মিত একটি সেতুর ওপর দিয়ে স্থানীয়দের চলাফেরায় বাধা দেওয়া হচ্ছে- এমন অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দায়েরের পর দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। একপক্ষের অভিযোগ- সেতুর একপাশে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়ার কারণে লোকজন যাতায়াত করতে পারছেন না। আর অপরপক্ষের অভিযোগ- সেতুর ওপর গরু বেঁধে রেখে লোকজনের চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

দু'টি অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার বড় মোহাম্মদপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নলজুর নদীর নালী খালের ঊপর কয়েকবছর আগে দুর্যোগ, ত্রাণ ও পূনর্বাসন কার্যালয়ের বাস্তবায়নে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৬ ফুট দৈর্ঘের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটির পাশে যুক্তরাজ্য প্রবাসী মুহিত মিয়ার বাড়ি হওয়ায় সেতু দিয়ে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল এমনকি গরু-ছাগল চলাচলেও মুহিত মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রায়ই বাধা প্রদান করা হয়। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে বসে সালিশ বৈঠক। এতে মুহিত মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে আর সেতু দিয়ে চলাচলে বাধা-নিষেধ প্রদান করা হবে না বলে গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করার পর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিষ্পত্তি হলেও সম্প্রতি প্রবাসী মুহিত মিয়ার বাড়ির লোকজন সেতুর সংযোগ সড়কের মুখে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেন। ফলে সেতু দিয়ে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে গত ১৬ জুন স্থানীয় আজাদ মিয়া এলাকাবাসীর পক্ষে জগন্নাথপুরের ইউএনও বরাবরে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। অপরদিকে এই অভিযোগের বিপক্ষে গত ২১ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর স্থানীয়দের পক্ষে পাল্টা লিখিত অভিযোগ করেছেন মোহাম্মদপুর গ্রামের মিরাজ মিয়া।

মিরাজ মিয়া গংরা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, বড় মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত কালা মিয়ার ছেলে আজাদ মিয়া অনেকদিন ধরে গ্রামের নালী খালের সেতুর উপর তার পালিত বড় আকৃতির একটি গরু সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেঁধে রাখেন। যে কারণে শিশু-কিশোরসহ স্থানীয়দের চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে। স্থানীয় লোকজন গরুটি সেতুর উপর থেকে সরিয়ে নিতে আজাদ আলীকে বললে এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এটি সরানো হবে না।

এ বিষয়ে আজাদ আলী বলেন, সেতুর সংযোগ সড়কে প্রবাসীর পরিবারের লোকজন বাঁশ দিয়ে বেঁধে রেখে জনসাধারণের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। এ বিষয়টি আমরা ইউএনও মহোদয়ের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে অহেতুক মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। গরুটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে বাইরে নিয়ে যেতে হয়। সেতুর উপর আমি গরু বেঁধে রাখিনি।

প্রবাসীর পক্ষের মিরাজ মিয়া অভিযোগ করে জানান, এলাকাবাসীর নিষেধ অমান্য করে সরকারি সেতু দিয়ে বিশাল আকৃতির গরুটি বেঁধে রেখে স্থানীয়দের যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে না। এজন্য বিষয়টি প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছালিক মিয়া বলেন, দুইপক্ষই বিষয়টি আমাকে অবহিত করেছেন। তারা একই গোষ্ঠীর লোক।

জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম বলেন, দুইপক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

 

এএ/আরআর-০৪