‘খয়রাতি’ শব্দের ব্যবহার ছোট মানসিকতার পরিচয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ২৩, ২০২০
০১:১১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ২৩, ২০২০
০১:১১ পূর্বাহ্ন



‘খয়রাতি’ শব্দের ব্যবহার ছোট মানসিকতার পরিচয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশের পণ্যে চীন সরকারের দেওয়া শুল্কমুক্ত সুবিধাকে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘খয়রাতি’ উল্লেখ করে যে খবর প্রকাশ করা হয়েছে, সেটা ‘ছোট মানসিকতার পরিচয়’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

আজ সোমবার এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ বিষয়ে ভারতীয় কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদন আমাদের নজরে এসেছে। চীনের দেওয়া সুবিধা সম্পর্কে যে শব্দের ব্যবহার তারা করেছে তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। তবে এর বিরুদ্ধে আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে চাই না।’ যেসব পত্রিকা এই ভাষা ব্যবহার করেছে তারা ‘সাংবাদিকতার নৈতিকতা বিবর্জিত’ কাজ করেছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১৯ জুন জানায়, চীনের বাজারে আরও পাঁচ হাজার ১৬১টি পণ্যের শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে দেশটিতে মোট শুল্কমুক্ত পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল আট হাজার ২৫৬টি। এর ফলে চীনে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি পণ্যের ৯৭ শতাংশই শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় এলো।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ এখন মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে থাকলেও স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাণিজ্যের ওই প্রাধিকারটি পেতে দীর্ঘদিন ধরে দু’দেশের আলোচনা চলছিল। সম্প্রতি এটি দিতে সম্মত হয় চীন সরকার। আগামী ১ জুলাই থেকে বেইজিং প্রদত্ত সুবিধার ওই ঘোষণা কার্যকর হতে যাচ্ছে।

কিন্তু সম্প্রতি সীমান্তে ভারতের সেনাদের পেটানো চীন কেন বাংলাদেশকে এই মুহূর্তে এমন সুবিধা দিলো, তা নিয়ে নাখোশ সেদেশের গণমাধ্যম। সেই অসন্তোষই প্রকাশ পায় তাদের প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশকে দেওয়া চীনের এই সুবিধাকে ‘খয়রাতি’ উল্লেখ করে গত শনিবার (২০ জুন) ভারতের কয়েকটি গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করে। তাদের দাবি চীন ও ভারতের মধ্যে সংঘাতের জেরে বাংলাদেশকে এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বাগে টানতে চাইছে চীন।

কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা প্রথমে ‘খয়রাতি’ শব্দের ব্যবহার করে খবর প্রকাশ করে। পরে জি নিউজের বাংলা সংস্করণ ‘২৪ ঘণ্টা’র সংবাদের শিরোনামেই ‘খয়রাতি’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। এমন খবর প্রকাশের পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন যে সুবিধা দিয়েছে তা আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের দীর্ঘদিনের ফসল। অনেকদিন ধরেই আমরা এই সুবিধা চীনের কাছে চেয়ে আসছিলাম।

ড. মোমেন বলেন, সম্প্রতি করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আমাদের অর্থনীতি বিরাট একটা ধাক্কা খাচ্ছে। তৈরি পোশাকের বিদেশি ক্রেতারা বিরাট অংকের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আসা কমবে বলেও আশঙ্কা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা সকল বন্ধু দেশের কাছেই সহায়তা চাই। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প পণ্যে আগামী দুই বছর শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা চেয়েছি। তারা বিবেচনা করবে বললেও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।

ড. মোমেন বলেন, আমরা চীন এমনকি প্রতিবেশী ভারতের কাছেও এ ধরনের সুবিধা চেয়েছি। চীন খুবই উপযুক্ত সময়ে অন্যান্য এলডিসিভুক্ত দেশেগুলোর সাথে বাংলাদেশকে এই সুবিধা দিয়েছে। চীনের সাথে আমাদের বাণিজ্যিক ঘাটতি অত্যন্ত বেশি। আশা করি আট হাজারের বেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা সেই ঘাটতি কিছুটা হলেও কমিয়ে আনবে।

এনপি-০৩