মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ আসছে!

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ২৩, ২০২০
১২:১৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ২৩, ২০২০
১২:২০ পূর্বাহ্ন



মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ আসছে!

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। চলতি বাজেট অধিবেশন শেষে যেকোনো সময় এই অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। এর পাশাপাশি সীমিত আকারে আবারও মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে পারে। সরকার ও আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। 

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এমন (অন্তর্ভুক্তি) কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না তা আমি জানি না। তবে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।’ ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর এই মন্ত্রণালয় এখন মন্ত্রীশূন্য। অথচ সামনে হজ মৌসুম। এ অবস্থায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মন্ত্রী অথবা প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু বাজেট অধিবেশন চলায় বিষয়টি থেমে আছে। সরকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাজেট নিয়ে ব্যস্ততা কমলেই এই মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিমন্ত্রী নিয়োগের সম্ভাবনাই বেশি।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের শূন্য স্থান পূরণে কাকে বসানো হবে তা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ গুঞ্জন চলছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু নাম নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। চার নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন, ময়মনসিংহ-৭ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী, ঝালকাঠি-১ আসনের বজলুল হক হারুন, পটুয়াখালী- ৩ আসন থেকে নির্বাচিত আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যার সৈয়দ নাজিবুল বাশার মাইজভান্ডারি।

এর মধ্যে হাফেজ রুহুল আমিন মাদানীর সম্ভাবনা বেশি বলে অনেকে মনে করছেন। তিনি এখন পর্যন্ত দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথম নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালে। বর্তমানে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ব্যক্তি হিসেবে তিনি ক্লিন ইমেজের বলে অনেকে জানিয়েছেন।

বাকি তিনজনের নাম আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মুখে উচ্চারিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগও আছে। নেতাকর্মীরা বলেন, ঝালকাঠি-১ আসনের বজলুল হক হারুন ধার্মিক লোক। তিনি তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সরকারের গত মেয়াদে তিনি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণায় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ-সৌদি আরব সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। 

এছাড়া ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন এই সংসদ সদস্য। সংসদে মোনাজাতের বিষয় এলেই স্পিকার তাকে দায়িত্ব দেন। কেউ কেউ বলছেন, বনানীর রেইনট্রি হোটেলের ঘটনায় দারুণভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। এ কারণে দলের শীর্ষপর্যায়ের অনেকেই তার ওপর মনোক্ষুণ্ন।

পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে নির্বাচিত আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন। তিনি চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে তার যথেষ্ট অবদান আছে। তিনি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। ১৯৯৮ সালে তিনি শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় বস্ত্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সংস্কারপন্থী হওয়ায় ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন।

আলোচনায় থাকা সৈয়দ নাজিবুল বাশার মাইজভান্ডারি ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। এখন পর্যন্ত তিনি চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগ পরিবারেরই সদস্য ছিলেন। পরে তিনি দলত্যাগ করেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। কেউ কেউ বলছেন, যেহেতু ১৪ দলের শরিক থেকে এবার কাউকে মন্ত্রী করা হয়নি, সে কারণে এবারও তার সম্ভাবনা কম। 

করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে দেশের স্বাস্থ্য খাত। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন সচিবকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাত নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনায় সরকারের উচ্চ পর্যায় অসন্তুষ্ট। সে কারণে এই মন্ত্রণালয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে একজন প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এর বাইরেও যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে। টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দুজনের ঠাঁই হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান জাহিদ মালেক এবং প্রতিমন্ত্রী হন ডা. মুরাদ হাসান। পরে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর ফলে মুরাদ হাসানকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আর নতুন করে প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

জেএসএস/এনপি-১৯