সুনামগঞ্জে ভূমি কর্মকর্তার উপর হামলাকারী আটক

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি


জুলাই ০২, ২০২০
১১:২৫ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ০২, ২০২০
১১:২৫ অপরাহ্ন



সুনামগঞ্জে ভূমি কর্মকর্তার উপর হামলাকারী আটক

ফারুক আহমদ মনোহর

সুনামগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কাজী শামছুল হুদা সোহেলের উপর মুখোশধারী হামলাকারী দলের প্রধান হত্যা, নারী নির্যাতনসহ একাধিক মামলার আসামি ফারুক আহমদ মনোহরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে জনতা।

আজ বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় জনতা ছাতক থেকে তাকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এর আগে হামলাকারীর সহযোগী শহরের তিন উঠতি সন্ত্রাসী ও একাধিক মামলার আসামিদেরও স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছিল।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ফারুক তার এলাকায় গেলে ক্ষুব্ধ জনতা তাকে আটক করে ছাতক থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। গ্রেপ্তারকৃত ফারুককে রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হামলার মূল পরিকল্পনাকারীর তথ্য উদ্ধার সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন জেলা তহসিলদার সমিতির লোকজন।

ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, 'স্থানীয় এলাকাবাসী ফারুক আহমদ মনোহরকে তার এলাকা থেকে ধরে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আমরা তাকে সুনামগঞ্জ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে ওই থানায় খবর দিয়েছি।'

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদুর রহমান বলেন, 'ভূমি কর্মকর্তার উপর কিছুদিন আগে মুখোশধারী হামলাকারী ফারুককে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। আমরা তাকে থানায় আনার জন্য পুলিশ পাঠিয়েছি।'

জানা গেছে, গত ১০ জুন সকালে সুনামগঞ্জ শহরের কাজীর পয়েন্টে মুখোশ পড়ে সুনামগঞ্জ শহরের কয়েকজন উঠতি সন্ত্রাসীকে নিয়ে কাজী শামসুল হুদা সোহেলের উপর হামলা করে ফারুক। তারা রড দিয়ে তাকে বেধড়ক পেটায়। মাথায় আঘাত পেয়ে তিনি নিচে পড়ে গেলে ফারুক আহমদ মনোহর তার উপর লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি আক্রমণ করে তিন সহযোগীর সহায়তায়। এ সময় স্থানীয় জনতা মুখোশধারী হামলাকারী ফারুকের সহযোগী সুনামগঞ্জ শহরের একাধিক মামলার আসামি তিন তরুণকে আটক করে পুলিশে দিয়েছিল। ওই ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল মূল হামলকারী। এ ঘটনায় অফিসের কোনো দুর্নীতিবাজ চক্র জড়িত থাকতে পারে বলে অনেকেরই ধারণা।

আরও জানা গেছে, ছাতকের কাজিরহাটা গ্রামের বাসিন্দা মূল হামলাকারী ফারুক আহমদ মনোহর একটি দুর্নীতিবাজ চক্রের হয়ে ভূমি কর্মকর্তা কাজী শামসুল হুদা সোহেলকে প্রাণে হত্যা করতে গত ৯ জুন সুনামগঞ্জ শহরে এসে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেয়। সে শহরের একাধিক মামলার আসামি আরপিন নগরের মহিবুর রহমানের ছেলে রবিন মিয়া (২০), একই গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে মো. আকাশ (২২) ও একই গ্রামের শহিদুল হকের ছেলে নিহারুল হক রবিনকে (২২) নিয়ে বৈঠক করে। তাদেরকে হামলাকারীর সঙ্গে পাঠিয়ে দেয় উত্তর আরপিন নগরের জুহিন নামের আরেক যুবক। পরদিন ১০ জুন সকালে কাজীর পয়েন্টেস্থ অফিসে যাওয়ার পথে শামসুল হুদা সোহেলের উপর মুখোশ পড়ে হামলা চালায় ফারুক। তাকে সহযোগিতা করে ওই তিন যুবক। এ সময় ভূমি কর্মকর্তার চিৎকারে আশপাশের মানুষ এগিয়ে এলে মূল হামলাকারী পালিয়ে যায়। সন্দেহবশত তিন তরুণকে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ওইদিনই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মূল হামলাকারীকে সহযোগিতার কথা স্বীকার করে ঘটনায় জড়িত বলে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেয় আটক তিন তরুণ।

এ ঘটনায় গত ১১ জুন সুনামগঞ্জ থানায় ফারুককে প্রধান আসামি করে ৫ জনের নামোল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন আহত ভূমি কর্মকর্তা কাজী শামসুল হুদা সোহেল। মামলার আরেক আসামি জুহিন এখনও পলাতক।

 

এসএস/আরআর-১১