যাদুকাটায় চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

তাহিরপুর প্রতিনিধি


জুলাই ০৬, ২০২০
১১:০৫ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ০৬, ২০২০
১১:০৫ অপরাহ্ন



যাদুকাটায় চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্ত নদী যাদুকাটায় বালি-পাথরবাহী নৌযান থেকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে নৌ-মালিক, বালি-পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আজ সোমবার (৬ জুলাই) দুপুরে ফাজিলপুর নদীর তীরে প্রায় আধা ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।  

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, মিয়ারচড় বালি-পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল গণি, সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়া, বালি-পাথর ব্যবসায়ী সালাম সর্দার, একিন আলী, শাহিনুর, মতি মিয়া, গণি মিয়া, আবু তাহের, ফরিদ মিয়া, হাছান আলী প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, টোল-ট্যাক্স আদায়ের নাম করে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণকূল গ্রামের মর্তুজ আলীর ছেলে আবুল কাসেম, তার সহোদর ফয়সল, সেলিম গংরা প্রতি বাল্কহেড নৌকা থেকে ২/৪ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে আসছে, যা সরকারি নিয়ম বহির্ভূত।

বক্তারা আরও বলেন, নৌকাভেদে ২০০/৯৫০ টাকা টোল আদায়ের নিয়ম থাকলেও তারা জোরপূর্বক ২/৪ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে থাকে। তাদের চাহিদামতো টাকা না দিলে নৌকা আটকে রেখে নৌকার মাঝি ও শ্রমিকদের মারধর করে। জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক সন্ত্রাসের মামলা রয়েছে। তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যাদুকাটা নদীর ব্যবসায়ী, নৌশ্রমিক ও মালিকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। কেউ প্রতিবাদ করারও সাহস পায় না। কারণ প্রতিবাদ করলেই হামলার শিকার হতে হয়। 

বক্তারা অনতিবিলম্বে কাসেম ও ফয়সল গংদের গ্রেপ্তার করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন। 

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) বিকেলে পার্শ্ববর্তী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচড় গ্রামের বালি-পাথর ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ডালিমের নৌকা আটক করে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে কাসেম গংরা। টাকা না দেওয়ায় দিনভর নৌকা আটকে রাখে তারা। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে জাকির হোসেন ডালিম বাদী হয়ে আবুল কাসেমসহ তার দুই সহোদরকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ খবর পাওয়ার পর রাত ৯টায় কোনো প্রকার টোল আদায়ের রশিদ ছাড়াই ১ হাজার টাকা রেখে নৌকাটি ছেড়ে দেওয়া হয়। 

পরদিন শুক্রবার (৩ জুলাই) দুপুরে তাহিরপুর থানার এসআই মিজানুর রহমান, এসআই শংকর চন্দ্র দেব অভিযোগের তদন্ত করতে ঘটনাস্থল আনোয়ারপুর বাজারে গিয়ে বালিজুরী ইউপি কার্যালয়ে বাদী ও স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তাদের সামনেই অভিযুক্ত সেলিম আহমদ বাদী ও স্বাক্ষীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি করেন এবং হুমকি দেন। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে থামাতে রীতিমতো হিমসিম খান। 

ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে টোল-ট্যাক্সের ইজারাদার অভিযুক্ত আবুল কাসেমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগযোগ করলে তিনি এ প্রতিবেদককে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি বরং বিষয়টি যেন গণমাধ্যমে প্রকাশ না করা হয় এমন অনুরোধ করেন।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এএইচ/আরআর-০৬