জগন্নাথপুরে বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগে মানুষ

আলী আহমদ, জগন্নাথপুর


জুলাই ২৬, ২০২০
১০:৪৭ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২৬, ২০২০
১০:৪৭ অপরাহ্ন



জগন্নাথপুরে বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগে মানুষ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। গতকাল শনিবার ভোররাত থেকে বাসা-বাড়ির এলাকা থেকে ধীরে ধীরে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনও উপজেলার নদ-নদী ও হাওরে পানি বেশি রয়েছে। সাম্প্রকিত তিন দফা বন্যায় নাজেহাল উপজেলাবাসী। বাসা-বাড়ির আঙিনা থেকে পানি কমতে শুরু করলেও রয়ে গেছে বন্যার ভোগান্তি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অব্যাহত বৃষ্টিপাতে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত ২৪ জুন জগন্নাথপুরে প্রথম দফায় বন্যা হয়। গত ১১ জুলাই ফের ২য় দফায় বন্যা দেখা দেয়। এরপর গত ১৯ জুলাই থেকে তৃতীয় দফার বন্যা দেখেন উপজেলাবাসী। প্রথম ও দ্বিতীয় দফা বন্যায় কলকলিয়া, চিলাউড়া-হলদিপুর, রানীগঞ্জ ও জগন্নাথপুর পৌরসভার একাংশের নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত ছিল। তবে তৃতীয় দফা বন্যায় জগন্নাথপুরের সর্বত্র প্লাবিত হয়। 

একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় তৃতীয় দফা বন্যার ফলে অসংখ্য বাসা-বাড়িতে পানি প্রবেশ করে। অনেকেই ঘরের চৌকির উপর অবস্থান নেন। আবার কেউ কেউ বাশের মাচা বেঁধে সেখানে বসবাস করছেন পরিবার-পরিজন ও গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি নিয়ে। এখনও সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা। গতকাল বন্যার পানি কিছুটা  কমলেও নিম্নাঞ্চলের বাসা-বাড়িতে পানি রয়ে গেছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রায় সকল সড়কের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি রয়েছে। সিলেট বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়কেরও একই অবস্থা। এ দুই সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। জগন্নাথপুরের শত শত গ্রামীন রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। লোকজনের চলাফেরার প্রধান সম্বল এখন নৌকা।

সরেজমিনে বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক পরিবার পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে চৌকিতে বসবাস করছেন। কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন, আবার অনেকেই আত্মীয়-স্বজনের উঁচু বাড়িতে গিয়ে উঠেছেন।

জগন্নাথপুর পৌরসভার ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে কথা হয় মিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'ঘরে বন্যার পানি উরু সমান। পানিতে ঘরের অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তলিয়ে গেছে। জীবন রক্ষায় আশ্রয়কেন্দ্রে এসে উঠেছি।'

কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হাসিম বলেন, 'শনিবার বন্যার পানি সামান্য কমেছে। তবে এখনও ইউনিয়নের ৯০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি। বন্যার পানিতে গ্রামীন রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে।'

জগন্নাথপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, 'জগন্নাথপুরের একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন এবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। উপজেলার ২৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। পানি কিছুটা কমেছে। আমরা বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। দুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে।

 

এএ/আরআর-০৯