জামালগঞ্জে বন্যার্তদের পাশে রেজাউল করিম শামীম

জামালগঞ্জ প্রতিনিধি


জুলাই ২৭, ২০২০
০৭:১৩ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২৭, ২০২০
০৭:১৩ অপরাহ্ন



জামালগঞ্জে বন্যার্তদের পাশে রেজাউল করিম শামীম

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে বন্যাদুর্গত দেড় সহস্রাধিক পরিবারের মাঝে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম শামীম। রবিবার (২৬ জুলাই) দিনব্যাপী ফেনারবাঁক ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ও আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে বানভাসী মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন তিনি।

এর আগে গত ১৭ জুলাই জামালগঞ্জ উত্তর এবং বেহেলী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ভীমখালী ইউনিয়নে বন্যায় বিপর্যস্তদের হাতে ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন আওয়ামী লীগের এ নেতা। এছাড়া বানভাসি শিশুদের মাঝে বিস্কুটের প্যাকেটও বিতরণ করেন তিনি। তাঁর এই ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।

ফেনারবাঁক ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণকালে দেখা যায়, ত্রাণের খবর পেয়ে হন্যে হয়ে ছুটে আসছেন বন্যাকবলিত মানুষ। চাল, চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের প্যাকেট পেয়ে দুর্গতদের চোখে-মুখে সন্তুষ্টির ভাব ফুটে উঠেছে। বন্যায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া এসব মানুষ একটু সাহায্য-সহযোগিতা পেতে কতটা উন্মুখ তা তাদের বিবর্ণ চেহারা স্পষ্টত জানিয়ে দেয়। তবে এ ত্রাণ তৎপরতায় যতটা না খুশি হয়েছেন তার চেয়ে বেশি কষ্ট ভোগ করছেন বানের পানিতে ভাসা হাওরপাড়ের এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এমনটি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জানা যায়, তিন দফা বন্যার ক্ষত এখনও কাটিয়ে উঠতে পারছে না উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে উপজেলার বড় দুই হাওর হালি ও পাগনাপাড়ের মানুষ বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যার পানিতে তারা এখনও ভাসমান অবস্থায় দিন পার করছেন। ঢেউ আর আফালে বিপন্ন হয়ে পড়েছে তাদের জীবন। এবারের টানা তিনবারের বন্যা হাওরবাসীকে আশ্রয় ও কর্মহীন করে তুলেছে। বন্যাগ্রস্ত অনেক পরিবার আছে যারা আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নিলেও অধিকাংশ পরিবার এই বন্যার পানিতে গরু-বাছুর নিয়ে বসতভিটা আঁকড়ে ধরে খেয়ে না খেয়ে কোনোরকনে দিনাতিপাত করছেন।

বন্যায় ভাসমান এসব মানুষের সাহায্যে সরকারের তরফ থেকে যে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সেই অপ্রতুলতার কথা চিন্তা করে বানভাসিদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন রেজাউল করিম শামীম। রবিবার সকাল ১১টায় নৌকাযোগে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এ সময় ফেনারবাঁক ইউনিয়নের সেলিমগঞ্জ বাজার, ভুইত্থারপুর, শরীফপুর, কালাগুজা, সৈয়দনগর, সুজাতপুর, হাকিমপুর, কাশিপুর, লক্ষীপুর, ছয়হারা, মাতারগাঁও গ্রামসহ খোজারগাঁও বাজার, কামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নবীন চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রিত পরিবারের মাঝে ৭শ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এর আগে বেহেলী ইউনিয়নের আছানপুর, হিজলা, মদনাকান্দি, দুর্গাপুর, নওয়াপাড়া, মামুদপুর, হরিনাকান্দি, রাধানগর এবং জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের কামিনীপুর, ইনচানপুর, হোসেনপুর, মুসলিমপুর ও ভীমখালী ইউনিয়নের বন্যাকবলিত গ্রাম ও আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় হাজারখানেক পরিবারের মাঝে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেন রেজাউল করিম শামীম।

ত্রাণ বিতরণে অংশ নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মিহির সরকার বলেন, 'এ উপজেলায় একমাত্র রাজনীতিক হিসেবে রেজাউল করিম শামীম বিভিন্ন দুর্যোগে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। করোনা থেকে শুরু করে বর্তমান বন্যায় বিপন্ন মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজের হাতে ত্রাণ তুলে দিচ্ছেন তিনি। এতে হাওরপাড়ের মানুষ কিছুটা হলেও উপকৃত হচ্ছেন। দুর্যোগকবলিত মানুষের মঙ্গলার্থে তাঁর এই সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করছি।'

দুর্গত মানুষের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে রেজাউল করিম শামীম বলেন, 'জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার বরাবরই দুর্যোগগ্রস্ত মানুষের কথা চিন্তা করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তবে সরকারের একার পক্ষে দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। এ জন্য সামর্থবান মানুষের এগিয়ে আসা দরকার। বিপদগ্রস্ত মানুষের ভরসা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের একজন সৈনিক হিসেবে বানভাসিদের পাশে দাঁড়ানোটা আমার দায়িত্বের অংশ মনে করে ত্রাণ বিতরণে এগিয়ে এসেছি। যেকোনো দুর্যোগে বিপদগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে আমার সাহায্যের হাত বাড়ানো অব্যাহত থাকবে।'

 

বিআর/আরআর-০২