বিয়ানীবাজারের কানিগাং খাল এখন ময়লার ভাগাড়

শিপার আহমদ, বিয়ানীবাজার


আগস্ট ০৮, ২০২০
১০:৪৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০৮, ২০২০
০৬:২১ অপরাহ্ন



বিয়ানীবাজারের কানিগাং খাল এখন ময়লার ভাগাড়

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কানিগাং খালটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালের পাড়ে ফেলা ময়লা-আবর্জনার কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে আশপাশের রাস্তাঘাট। দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে হাঁটাই দুষ্কর। খালের উপর ফেলা বেশিরভাগ আবর্জনাই পলিথিন। এতে খালের পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে খালের মুখগুলো। ফলে বর্ষায় আশপাশে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।

জানা গেছে, মাথিউরার কানিগাং খাল স্থানীয় অধিবাসী ও ব্যবসায়ীদের ফেলা বর্জ্যে অনেক আগেই জৌলুস হারিয়েছে। একসময়ের স্রোতস্বীনি এই খাল ভরা বর্ষার মৌসুমেও মৃতপ্রায়। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গৃহস্থালির প্লাস্টিক বর্জ্যসহ বিভিন্ন ধরণের বর্জ্য খালের গতিরোধ করেছে। এসব বর্জ্যের মধ্যে কোরবানির পশুর ফেলে দেওয়া অংশ আর মরা হাঁস-মোরগও রয়েছে। ফলে পঁচা গন্ধে সড়ক দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহারের বর্জ্যে ধ্বংস হচ্ছে খালটি, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। হুমকির মুখে রয়েছে সেখানকার জীববৈচিত্র্য। এ অবস্থায় জলাধার ভরাট থেকে রক্ষা ও স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

এলাকার প্রবীণরা জানান, একসময় এ খাল দিয়ে বড় বড় নৌকা চলত। দুই দশক আগেও ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং বালু, ইট ও পাথর বোঝাই নৌকা চলত এ খাল দিয়ে। পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন নানা প্রয়োজনে পানি সরবরাহ করত এ খাল। সেই দৃশ্য এখন অতীত। এখন পানি ব্যবহার তো দূরের কথা, খালের পাশ দিয়ে যাতায়াত করতে গেলেও নাক-মুখ চেপে ধরতে হয়। তাই বসবাসের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে খালটিকে ভালো একটি অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি স্থানীয় অধিবাসীদের।

স্থানীয় খলাগ্রামের বাসিন্দা ছালেহ উদ্দিন বলেন, 'খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে এ থেকে আসা দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া মুশকিল। এই খালের দুইপাড়েই রয়েছে শত শত ঘরবাড়ি। এখানকার বাসিন্দাদের খালের আবর্জনার দুর্গন্ধের কারণে সারাক্ষণই দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হয়। দুর্গন্ধের পাশাপাশি নানারকমের পোকার উপদ্রব তো আছেই।'

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সুরমান আলী বলেন, 'আগে বর্ষা মৌসুমে কানিগাংয়ের চেহারাই থাকত অন্যরকম। খালের পানি ছিল অনেক বেশি স্বচ্ছ। কিন্তু এখন খালের পানি দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত। এই দুর্গন্ধের কারণে আশপাশের বাসিন্দারা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া মশার বিস্তার দ্রুত ঘটছে। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। খালটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে উপজেলা প্রশাসন বা স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জনমনে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ।'

এ বিষয়ে মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, 'পরিবেশ উন্নয়ন ও ইউনিয়নের মানুষকে সচেতন করতে পরিষদের পরীক্ষামূলক উদ্যোগ কাজে আসেনি। এ অঞ্চলের অধিবাসী ও ব্যবসায়ীরা খালের পরিবেশ নষ্ট করেছেন। শিগগিরই খালটি পরিষ্কার করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।'

 

এসএ/আরআর-০১