সিলেট মিরর ডেস্ক
অক্টোবর ২৬, ২০২৫
০৪:৪৯ অপরাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ২৬, ২০২৫
০৫:২৬ অপরাহ্ন
সাগরে গভীর নিম্নচাপ, সন্ধ্যায় রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে আজ রোববার সন্ধ্যার দিকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অফিস বলছে, বাংলাদেশ উপকূলে সরাসরি আঘাতের আশঙ্কা না থাকলেও ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে সাগর কিছুটা উত্তাল থাকবে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে।
আজ রোববার সকাল ৯টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে আজ রোববার ভোর ৬টায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা সমকালকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে আজ রোববার সন্ধ্যার দিকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না। ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ওডিশ্য ও অন্ধ্রপ্রদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
কাজী জেবুন্নেছা আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। চলতি মাসের ২৯ তারিখ থেকে শুরু হয়ে আগামী মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত থাকতে পারে এই বৃষ্টি।
আবহাওয়ার তিন নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ আকারে একই এলাকায় অর্থাৎ, ১১ দশমিক শূন্য ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রঘিমাংশে অবস্থান করছে।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিম্নচাপটি আজ রোববার ভোর ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘনীভূত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘মন্থার’; থাই ভাষার শব্দটির অর্থ ‘সুন্দর ফুল’। নামটি দিয়েছে থাইল্যান্ড। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের নাম আগেভাগেই নির্ধারণ করে রেখেছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা সমকালকে বলেন, আজ উপকূলীয় এলাকায় ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল সংকেত আরও বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌসুমের শেষ ভাগে বঙ্গোপসাগরে এ ধরনের নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় নতুন কিছু নয়। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘূর্ণিঝড়গুলো আরও ঘন ঘন ও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। তাই উপকূলের মানুষ ও জেলেদের সতর্ক থাকা জরুরি।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বছরের দুটি সময় ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা থাকে। একটি মৌসুমি বায়ু আসার আগে অর্থাৎ, এপ্রিল থেকে মে মাস। এবং আরেকটি মৌসুমি বায়ু চলে যাওয়ার পর অর্থাৎ, অক্টোবর থেকে নভেম্বর। সাধারণত বড় ঘূর্ণিঝড়গুলো হয়ে থাকে নভেম্বর মাসে।
জিসি / ০২