সড়ক সংস্কারের দাবিতে অচল জগন্নাথপুর

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ০১, ২০২০
১১:০৬ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ০১, ২০২০
১১:০৯ অপরাহ্ন



সড়ক সংস্কারের দাবিতে অচল জগন্নাথপুর

সংস্কারহীন জগন্নাথপুর-সিলেট (জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ) সড়কটি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা। আজ মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে জগন্নাথপুর উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি উপজেলা সদরে রিকশাও চলাচল করেনি।

বিভাগীয় শহর সিলেটের সঙ্গে যাতায়াত রক্ষাকারী জগন্নাথপুরের প্রধান সড়ক জগন্নাথপুর-সিলেট (জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর) ও জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়ক জগন্নাথপুর-সুনামগঞ্জ সড়কসহ জগন্নাথপুরের আভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে যান যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন উপজেলাবাসী। ফলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন জনসাধারণ। 

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্ট, জগন্নাথপুর-সিলেট বাসস্ট্যান্ড, ইকড়ছই এলাকা, হাসপাতাল পয়েন্টসহ জগন্নাথপুরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে শ্রমিকরা পিকেটিং করছেন। শ্রমিকদের বাধার কারণে কোনো প্রকার যান চলাচল করতে পারেনি। এমনকি মালামাল বহনকারী যানবাহনও চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। শহরে রিকশা চলাচলও বন্ধ ছিল। প্রয়োজনের তাগিদে বাইরে বের হওয়া লোকজনকে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ও এলাকাবাসী জানান, সিলেট বিভাগীয় শহরসহ রাজধানী ঢাকার সঙ্গে জগন্নাথপুর ও সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়ক দিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছেন। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বেহাল। গতবছরের শেষের দিকে জগন্নাথপুর অংশের ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হলে কাজটি পায় মাদারীপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হামীম সালেহ (জেভি)। চুক্তি অনুয়ায়ী গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ থেকে সড়কে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মার্চের প্রথমদিকে কাজ শুরু হয়। তবে ওই মাসেই করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব দেখা দেওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় সড়কের কাজ। সম্প্রতি সড়কে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় সংস্কারের দাবিতে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয়। 

জগন্নাথপুর উপজেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিজামুল করিম বলেন, 'সংস্কারের আশ্বাস দেওয়ায় একাধিকবার আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। বর্তমানে সড়কে বেহাল দশা বিরাজ করছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। প্রায় ৬ মাস ধরে সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। আমাদের কর্মসূচিকে বানচাল করতে গতকাল সোমবার দুই-তিনজন শ্রমিক দিয়ে সড়কের একাংশে কাজের নামে নাটক করা হয়েছে। দ্রুত সঠিকভাবে সড়কের কাজ না করা হলে আমাদের আন্দোলন চলবে।'

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার সাকলাইন হোসেন বলেন, 'করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে সংস্কারকাজ ব্যাহত হয়েছে। তবে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।'

জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) গোলাম সারোয়ার বলেন, 'সড়কের কাজ চলছে।'

জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, 'আন্দোলনকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা সড়কের গর্ত ভরাটের কাজ গত দুইদিন ধরে শুরু করেছি। তার পরও কর্মসূচির ডাক দেওয়া খুবই দুঃখজনক।'

 

এএ/আরআর-০১