ধর্মপাশা প্রতিনিধি
নভেম্বর ১৭, ২০২০
১১:১৪ অপরাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১৭, ২০২০
১১:১৪ অপরাহ্ন
সুনামগেঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ মুরাদ ও বাংলাদেশ মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজুয়ান আলী খান আর্নিকেরর বিরুদ্ধে করা 'ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা ও বানোয়াট' মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠন এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের একাংশের উদ্যোগে এই মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, আওয়ামী লীগ ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ এতে অংশ নেন।
সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক জুবায়ের পাশা হিমুর পরিচালনায় মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন তালুকদার, উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ তালুকদার, ধর্মপাশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ধর্মপাশা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ, উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের ধর্মপাশা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিন বেপারী, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এম আর খান পাঠান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন খান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ মুরাদ ও বাংলাদেশ মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজুয়ান আলী খান আর্নিক নিজ নিজ এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাঁরা দু'জনেই আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। গত ১১ নভেম্বর ঢাকার একটি আদালতে এই দু'জনকে জড়িয়ে এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টায় জড়িত থাকার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়েছে চলতি বছরের ১ নভেম্বর। ওইদিন শামীম আহমেদ মুরাদ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলা শহরে ছিলেন। স্বনামধন্য কয়েকটি জাতীয় দৈনিক সুনামগঞ্জের সাংবাদিক ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের দুইজন সদস্যের সঙ্গে তিনি সকাল ১০টা থেকে শুরু করে ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় কাটিয়েছেন। আর রেজুয়ান আলী খান আর্নিক ওইদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। এইই দুই জনপ্রিয় নেতাকে ফাঁসানোর জন্য পূর্বপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রভাবশালী একটি কুচক্রী মহল ধর্ষণের চেষ্টার এ মিথ্যা কল্পকাহিনী সাজিয়েছে।
তারা বলেন, শামীম আহমেদ মুরাদ গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে অংশ নিয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ছোটভাই মোজাম্মেল হোসেন রোকন। নির্বাচনে সাংসদ রতন নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে নির্বাচনে জয়ী করেছিলেন।
বক্তারা আরও বলেন, গতবছরের ১ অক্টোবর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাংসদ রতনের নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ভূমিকা রাখা, স্বজনপ্রীতি, অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করাসহ নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে একটি প্রতিবাদী বক্তব্য দেন শামীম আহমেদ মুরাদ। ওই বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হওয়ায় শামীম আহমেদ মুরাদের ওপর চরম ক্ষিপ্ত হন সাংসদ রতন। শামীম আহমেদ মুরাদের ঘনিষ্ট বন্ধু হলেন রেজুয়ান আলী খান আর্নিক। তাই ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় মিথ্যা মামলায় ওই দু'জন নেতা সাংসদ রতনের ষড়যন্ত্রে শিকার হয়েছেন। দ্রুত এই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলাটি প্রত্যাহার করা না হলে এ নিয়ে আগামীদিনে কঠিন আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন সাংবাদিকদের বলেন, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটি যেদিন ঘটেছে সেদিন আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। আমার অপারেশন হয়েছিল। ধর্ষণচেষ্টার ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা নেই। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এই আসনে আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে জড়িয়ে নানা ধরণের কল্পকাহিনী বানিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এসএ/আরআর-০৪