সিলেটে বাড়ছে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক


নভেম্বর ২৫, ২০২০
০১:৪৫ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৫, ২০২০
০২:০১ অপরাহ্ন



সিলেটে বাড়ছে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর দাম

শীতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার আশঙ্কায় সিলেটে বাড়তে শুরু করেছে মাস্কসহ অন্যান্য সুরক্ষা পণ্যের দাম। করোনা শনাক্তের শুরুর দিকে সারাদেশের মতো সিলেটেও সুরক্ষাসামগ্রীর ঘাটতি থাকায় দাম বেশি ছিল। তবে পরবর্তীতে কমতে থাকে এসব সামগ্রীর দাম। 

সিলেট নগরের বেশ কয়েকটি এলাকায় এসব পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি করতে দেখা যায়। সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্কের দাম বেড়েছে। আগের দামেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রি হলেও সরবরাহ কম বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। এছাড়াও বাড়তি দামের আশায় অনেকেই এসব পণ্য মজুদ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের। ফলে হঠাৎ করেই এসব পণ্যের বাজার চড়া। নগরের চৌহাট্টা, আম্বরখানা, মীরবক্সটুলা, বন্দরবাজার, রিকাবীবাজার, মেডিকেল রোড, রাগীব আলী মেডিকেল এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। অনেক ফার্মেসিতেই পাওয়া যাচ্ছে না ফেস মাস্ক, জীবাণুনাশক স্প্রে ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। আবার পাওয়া গেলেও চাওয়া হচ্ছে বাড়তি দাম। বিশেষ করে ফেস মাস্কের দাম বেশ চড়া। মাস্ক প্রতি প্যাকেটে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ৫০ পিসের দেশীয় মাস্কের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা আর চায়না ফেস মাস্ক প্রতি প্যাকেট ১৭০ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়। হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম না বাড়লেও অনেক ফার্মেসিতেই পণ্যটির পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। 

নগরের রিকাবীবাজার এলাকার হেপি ফার্মেসির বিক্রেতা রহিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে করোনা সংক্রমণ কম থাকায় সুরক্ষা পণ্যের ব্যবসা অর্ধেকে নেমে এসেছে। বেচাবিক্রি কম থাকায় ফেস মাস্ক ও অন্যান্য সুরক্ষাসামগ্রীর অর্ডারও কম ছিল। কিন্তু এই শীতে করোনা সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদানুযায়ী সরবরাহ না পাওয়ায় এখন দাম কিছুটা বেড়েছে।’

আরেক বিক্রেতা শফি চৌধুরী বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর উৎপাদন সক্ষমতা কম থাকায় দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ কম ছিল। কিন্তু এখন তো উৎপাদন সক্ষমতা বেড়েছে, এখন কেন বাজারে এসব পণ্যের সরবরাহ কম তা বোধগম্য নয়।’

এদিকে, এসব পণ্যের ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বরাবরের মতো বাড়তি মুনাফার লোভে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। মেডিকেল রোড এলাকায় মাস্ক কিনতে আসা পার্থ সারথি জানান, অনেক ফার্মেসিতে মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে না। একটি ফার্মেসিতে পেলেও ৫ টাকার মাস্ক কিনেছেন ১০ টাকায় আর ১২০ টাকার স্যানিটাইজার কিনেছেন ১৪০ টাকায়।’

শীতে দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এমন আশংকার প্রমাণও ইতোমধ্যে মিলতে শুরু করেছে। সিলেটে গত সোমবার ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ জন। এর আগে রবিবার আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৪ জন এবং শনিবার আক্রান্ত হোন ১৯ জন। ঠিক এই অবস্থায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংক্রামণ পরিস্থিতি অবনতি নিয়ে শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ মানুষ এমনিতেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে চায় না, তার ওপর এসব সামগ্রীর বাজার মূল্য বৃদ্ধি পেলে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যবহার কমে যাবে। ফলে সংক্রমণ হার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই এখনই এসব পণ্যের বাজার পর্যবেক্ষণে মনিটরিং ও অভিযান জোরদার করা দরকার।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ও ‘নো মাস্ক নো এন্ট্রি’ এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। মাস্ক না পরায় বিভিন্ন স্থানে জরিমানাও করা হচ্ছে। কিন্তু এসব স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখনও সেই রকম অভিযান চোখে পড়েনি। এখনই বাজার নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে সামনে পরিস্থিতি কঠিন হবে। 

এনএইচ/আরসি-০৪