কোতোয়ালীর ওসি তদন্তসহ তিন পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক


নভেম্বর ২৫, ২০২০
০৬:৪২ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৫, ২০২০
০৭:৩৬ অপরাহ্ন



কোতোয়ালীর ওসি তদন্তসহ তিন পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান হত্যার ঘটনার আরও তিন পুলিশ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালী থানার ওসি তদন্ত সৌমেন মৈত্র, রায়হান হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল বাতেন এবং রায়হান হত্যাকান্ডে প্রত্যাহার হওয়া এএসআই কুতুব আলী।

বিষয়টি সিলেট মিররকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের। তিনি বলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ও সিলেট মহানগর পুলিশের নির্দেশে এ তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে গাফিলতি, এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়ার পলায়ন সবমিলিয়ে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’ তিনি জানান, সৌমেন মৈত্রকে ডিআইজি রংপুর রেঞ্জ কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং আব্দুল বাতেন ও কুতুব আলীকে এসএমপি পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ নিয়ে রায়হান হত্যার ঘটনায় নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো।

গত ১০ অক্টোবর গভীর রাতে নগরের কাস্টঘর এলাকা থেকে ধরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নির্যাতনে তিনি গুরুতর আহত হলে ১১ অক্টোবর তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি মারা যান। নিহত রায়হান নগরের নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।

পরে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে আহত হন রায়হান, পরে হাসপাতালে তিনি মারা যান। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের দাবিকে সঠিক নয় বলে জানানো হয়। রায়হানের পরিবারের দাবি, ফাঁড়িতে নির্যাতনে মারা গেছেন রায়হান। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী বাদী হয়ে ১২ অক্টোবর কোতোয়ালী থানায় হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলা করেন।

নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষিতে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। এ কমিটি অনুসন্ধানে ফাঁড়িতে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।

১৩ অক্টোবর থেকে লাপাত্তা হয়ে যান আকবর। তাকে গ্রেফতারে আন্দোলন দানা বাঁধে সিলেটে। ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকে আকবরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা জানায়, তিনি ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। পরদিন আদালতে হাজির করে আকবরের সাত দিনের রিমান্ড চায় পিবিআই। আদালত সাত দিনের রিমান্ডই মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড শেষে ১৭ নভেম্বর আকবরকে আদালতে হাজির করা হয়। কিন্তু তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি, মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইও নতুন করে রিমান্ডের আবেদন করেনি। ফলে আদালত আকবরকে কারাগারে প্রেরণ করেন।

রায়হান হত্যা মামলায় এখন অবধি এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কনস্টেবল টিুটু চন্দ্র দাস, হারুনুর রশিদকে দুই দফায় আট দিন করে এবং এএসআই আশেক এলাহীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাদেরকে প্রেরণ করা হয় কারাগারে।

এদিকে, রায়হানকে ছিনতাইকারী হিসেবে অভিযোগকারী শেখ সাইদুর রহমানকে গত ১৫ নভেম্বর প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার দেখায় পিবিআই। পরে তাকে নেওয়া হয় তিন দিনের রিমান্ডে।

 

এনএইচ-০১/এএফ-০২