বেড়েছে চাল চিনি তেলের দাম, সবজিতে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক


নভেম্বর ৩০, ২০২০
০১:২৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ৩০, ২০২০
০১:২৩ পূর্বাহ্ন



বেড়েছে চাল চিনি তেলের দাম, সবজিতে স্বস্তি

শীতের বাজারে বেড়েছে সবজির সরবরাহ। তাই দামও কিছুটা কমে এসেছে। কিন্তু অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। চলতি সপ্তাহে বেড়েছে চাল, তেল ও চিনির দাম। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও দেশি পেঁয়াজ এখনও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। 

শনিবার সিলেট নগরের বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে সবজির দাম। টমেটোর দাম ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুলা ২৫ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, লাল শাক প্রতি আটি ৫ টাকা ও আউশা লাউ ১০০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ফুলকপির দাম ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। 

সবজির দাম কমতির দিকে থাকলেও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির মধ্যেই রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে চিনি ৬২ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হলেও এখন ৬৫ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারে প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। স্বল্প আয়ের মানুষদের নিত্যপণ্যের মধ্যে থাকা ডাল, আলু ও ডিমের দামও বাড়তিতে রয়েছে। ডাল কেজি প্রতি ৮৫ টাকা, আলু ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতি হালি ৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

শীতের বাজারে নিত্যপণ্যের দামে উত্তাপ ছড়াচ্ছে চাল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তা প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে চালের দাম। আম্বরখানা এলাকার পাইকারি চাল বিক্রেতা জানান, গত সপ্তাহে ২৯ মালা চালের জন্য বস্তা প্রতি তার ২১৮০ টাকা গুণতে হয়েছিল। কিন্তু এই সপ্তাহে কেজিতে ২ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২২৮০ টাকায়। ময়মনসিংহ অঞ্চলের মিনিকেট আতব কেজিতে ১ টাকা বেড়ে বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মিনিকেট সেদ্ধ চালের দাম না বাড়লেও মিনিকেট আতপ চাল বস্তাতে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৫০ টাকায় ঠেকেছে। 

নিত্যপণ্যের বাজারে যখন উত্তাপ, পেঁয়াজের বাজারে তখন শীতলতার ছোঁয়া। তবে সেটা আমদানি করা পেঁয়াজের বেলায়। এগুলো অনেকটা ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। আমদানি করার মধ্যে এলসি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, চায়না ৩০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সিলেট নগরের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরেও বেশিরভাগ জায়গায় দেশি পেঁয়াজ পাওয়া যায়নি। গুটি কয়েক জায়গায় দেখা মিললেও সেগুলো ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা যায়। 

ব্যবসায়ী আশিক আহমদ বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজের মজুত শেষের পথে। তাই দাম বাড়তি। ক’দিন পরই নতুন দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসবে। এজন্য আর দোকানিরাও আগ্রহ দেখান না। ক্রেতাদের আগ্রহের কারণে যারাই কিনে আনছেন তাদের বেশি দাম দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কম রয়েছে, কারণ আমদানি করা পেঁয়াজে সবাই লোকসান দিয়ে বিক্রি করছেন।’     

বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ১০ টাকা ও প্যাকেটে ১৫ টাকা দাম বেড়েছে। সিলেট নগরে খোলা তেল বিক্রি হতে খুব একটা দেখা যায় না। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় ক্রেতারা বোতল কিংবা প্যাকেটজাত তেলে বেশি আগ্রহ দেখান। প্যাকেটজাত পাম তেল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা লিটার প্রতি বিক্রি করা হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিনের দাম বেড়ে এখন ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে সয়াবিন তেলের দাম এটাই সর্বোচ্চ বলে জানান ব্যবসায়ীরা। আগে তারা বোতলের তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য থেকে ক্রেতাদের কিছুটা ছাড় দিতেন। এখন আর সেটি দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। 

ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। মুরগি কেজিতে ১১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে, গরুর মাংস কেজি প্রতি ৫৫০ এবং খাসি ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

আরসি/বিএ-০৫