সিলেট মিরর ডেস্ক
জানুয়ারি ০৭, ২০২১
০৮:৩১ অপরাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ০৭, ২০২১
০৮:৩১ অপরাহ্ন
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই পাবার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকা পেতে আপাতত কোনো জটিলতা দেখছি না। আমরা আশা করছি ফেব্রুয়ারির মধ্যেই টিকা আসবে। সেটা হতে পারে প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য জানান।
ডা. সাবরিনা বলেন, টিকা কবে আসবে এটা আসলে আমরা ডিল করি না। মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টা দেখা হচ্ছে। তবে, ফেব্রুয়ারির শুরুতে টিকা আসার যে একটা সম্ভাবনা ছিল, এখনো সেটা রয়েছে।
টিকা প্রয়োগে প্রস্তুতির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ টিকা আসার আগেই প্রয়োগের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। টিকা সংরক্ষণ ও প্রয়োগে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ নিয়ে চলছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি। হামের টিকা দেওয়া শেষ হলেই জেলা-উপজেলার সংরক্ষণাগারে রাখা হবে কোভিড টিকা।
টিকা পেতে ভারতের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই
এদিকে, ভ্যাকসিন পেতে ভারতের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
তিনি বলেন, উৎপাদনের ওপর নির্ভর করবে কতটা দ্রুত দেওয়া যাবে। মানবতার সেবায় ভারতের ভ্যাকসিন। জরুরি ব্যবহারের জন্য প্রতিবেশী বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পাবে। এ নিয়ে ভারত আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে বলেও জানান ভারতীয় হাইকমিশনার।
ভ্যাকসিন নিয়ে জটিলতা শুরু যেভাবে
গত ৪ জানুয়াারি (রোববার) ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান আদার পুনাওয়ালার সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, আগামী দুই মাসে সেরাম ভারতের টিকার চাহিদা পূরণ করবে। ভারত সরকারকে প্রাথমিকভাবে ১০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহের পরই রপ্তানি করা সম্ভব হতে পারে। ওই সাক্ষাৎকারের পর শুরু হয় টিকা রপ্তানি নিয়ে বিভ্রান্তি। বাংলাদেশেও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। কারণ ওই টিকা কেনার জন্য সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তি করা হয়েছে।
এ নিয়ে বিভ্রান্তি চলার পর ৫ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) এক টুইটে ভিন্ন কথা বলেন আদার পুনাওয়ালা। টুইটে তিনি লেখেন, জনমনে বিভ্রান্তি দেখা দেওয়ার কারণে আমি দুটি বিষয় স্পষ্ট করছি; সব দেশে টিকা রপ্তানির অনুমোদন আমাদের দেওয়া হয়েছে এবং ভারত বায়োটেক সম্পর্কিত সাম্প্রতিক যেসব ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করতে প্রকাশ্যে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে।
স্থানীয়ভাবে তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজারে আনার দুই সপ্তাহের মধ্যে রপ্তানি শুরু করবে ভারত। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে ভ্যাকসিনের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার যে খবর বেরিয়েছে সেটি নাকচ করে দিয়েছেন দেশটির এ কর্মকর্তা।
বিশ্বে ভ্যাকসিনের যে চাহিদা রয়েছে তার প্রায় ৬০ শতাংশই উৎপাদন হয় ভারতে। দেশটি থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের রপ্তানি শুরুর অধীর অপেক্ষায় রয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ।
জানুয়ারিতে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটি ইতোমধ্যে জরুরি ব্যবহারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা করছে ভারত; আগামী জুলাইয়ের মধ্যে অন্তত ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করেছে দেশটি।
ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন প্রয়োগে সবুজ সংকেত দিয়েছে। অন্যান্য দেশকে করোনা ভ্যাকসিন দিয়ে সহায়তার পরিকল্পনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা।
এএফ/০৩