সাত উইকেটের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

খেলা ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২১
০৭:৪৫ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২১
০৭:৪৫ অপরাহ্ন



সাত উইকেটের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ার পর তিনটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে দুটি ও গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা একমাত্র টেস্টে পরাজয় হয় টাইগারদের। সব মিলিয়ে ৩ ম্যাচের একটিতেও জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি। সেই আক্ষেপ ঘুচতে পারে এবার। চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট জয়ের জন্য ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে ৭ উইকেট প্রয়োজন বাংলাদেশের। ক্যারিবীয়দের দরকার এখনো ২৮৫ রান।

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও উইন্ডিজ। এই ম্যাচে সাগরিকার উইকেটের চরিত্র যেন রহস্য হয়ে থাকল। বাংলাদেশে টেস্ট ম্যাচ মানেই শুরুর দিন থেকেই স্পিনারদের আধিক্য। ম্যাচের তৃতীয় দিনে রাজত্ব থাকে স্পিনারদের। অথচ চলমান টেস্টের তৃতীয় দিনের থেকে যেন চতুর্থ দিনের শুরুতে বেশি অসহায় ক্যারিবীয় স্পিনাররা। তবে ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে আবার উইকেটের চরিত্র বদলায়।

সকালের দিকে উইকেট থেকে তেমন কোন সাহায্য পাননি রাকহিম কর্নওয়েল, ওরারিক্যান, বোনাররা। কিন্তু লাঞ্চ বিরতির পর বাড়তি বাউন্সের সঙ্গে টার্ন, সবই দেখা গেল। এতে খেই হারালেন লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলামরা। তবে অধিনায়ক মুমিনুল হক চতুর্থ দিনে ইনিংস ঘোষণার আগে ক্যারিয়ারের ১০তম সেঞ্চুরি তুলে নেন। টেস্টে সেঞ্চুরির সংখ্যায় তামিম ইকবালকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দিনে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৩৯৪ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করে স্বাগতিকরা। জয়ের জন্য ক্যারিবীয়দের লক্ষ্য ৩৯৫ রান।

এই পাহাড় টপকাতে নেমে জবাবটা ভালোভাবেই দিচ্ছিল উইন্ডিজের দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল। মিরাজ-তাইজুলদের হালকা টার্নের বল পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি দুই ব্যাটসম্যানকে। শুরুর ১৬ ওভার স্বাগতিক বোলারদের আটকে রাখলেও ১৭তম ওভারে বিপত্তি বাঁধে। মিরাজের অফ স্টাপের বাইরে পিচ করা বলে লাইন হারান ক্যাম্পবেল। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন তিনি, লাভ হয়নি তাতে।

প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করা মিরাজ পরে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও কম গেলেন না এই অলরাউন্ডার। ক্যাম্পবেলকে ২৩ রানে ফেরানোর ২০ রানের মধ্যে ব্র্যাথওয়েট ও মোসেলেকে নিজের শিকারে পরিণত করেন। আউট হওয়ার আগে ব্র্যাথওয়েট ২০ ও মোসেলে ১২ রান করেন। ক্যাম্পবেল ও মোসলেকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। ব্র্যাথওয়েটের উইকেটের জন্য পুরো কৃতিত্ব পাবেন ইয়াসির আলী রাব্বি। সাকিব আল হাসানের পরিবর্তে ফিল্ডিং করতে নেমে শর্ট স্কয়ার লেগে এক হাতে অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়ে ব্র্যাথওয়েটকে ফেরান রাব্বি।

শেষ বিকেলে যতটা ভয়ঙ্কর ছিলেন টাইগার স্পিনাররা, ঠিক ততটাই প্রস্তুত ছিলেন বোনার ও মায়ার্স। তাইজুল-মিরাজদের নিচু হয়ে আসা বলগুলোও দক্ষতার সাথে ফিরিয়েছেন দুই ব্যাটসম্যান। সে সময় চোটে পড়া সাকিবের অভাব অনুভব করেছিল কি স্বাগতিক শিবির? সাকিবের মতো চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম ইকবালও। মিরাজের করা ইনিংসের ২৯তম ওভারের শেষ বলে মায়ার্সের কাভার ড্রাইভ আটকাতে গিয়েছিলেন তামিম। সে সময় আঙ্গুলে চোট পান তিনি। পরবর্তীতে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান এই ওপেনার।

৩৩ তম ওভারে মাইয়ার্সকে ফেরানোর সুযোগ তৈরি করেছিলেন মিরাজ। তবে উপরে ওঠা বল তালুবন্দি করতে পারেননি মুস্তাফিজ। শেষ পর্যন্ত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের সামনে কাটা হয়ে থাকলো বোনার-মায়ার্স জুটি। চতুর্থ উইকেট পার্টনারশিপে অবিচ্ছেদ্য ৫১ রান যোগ করেন দুজন। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে তিন উইকেট হারানো উইন্ডিজ দলের সংগ্রহ ১১০ রান। ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে মায়ার্স ৩৭ ও বোনার ১৫ রানে অপরাজিত থেকে ব্যাটিংয়ে নামবেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ: ৪৩০ ও  ২২৩/৮ ডিক্লে. (মুমিনুল ১১৫, লিটন ৬৮ মুশফিক ১৮; কর্নওয়েল ৩/৮১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৫৯ ও ১১০/৩ (মায়ার্স ৩৭*, ক্যাম্পবেল ২৩; মিরাজ ৩/৫২)

আরসি-০৭