নীরবে সরে গেলেন অলক কাপালি

ক্রীড়া প্রতিবেদক


ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
০১:৩০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
০১:৫৭ পূর্বাহ্ন



নীরবে সরে গেলেন অলক কাপালি

একাধিকবার ঘোষণা দিয়েও শেষ পর্যন্ত সিলেটের প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ মাঠে গড়ায়নি। লিগ শুরুর দাবিতে আন্দোলন পর্যন্ত করেছেন ক্রিকেটাররা। কাজ হয়নি। কখনও সংশ্লিষ্ট ক্লাব কর্মকর্তাদের অনীহা আবার কখনও করোনাভাইরাসের অজুহাত। এসবের জবাব দিতেই সিলেট ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন ‘টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট টুর্নামেন্ট’ আয়োজনের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ সেটিই ভেস্তে গেছে। যে কারণে শেষ পর্যন্ত এই উদ্যোগ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন সংগঠনের উপদেষ্টা ও জাতীয় দলের সাবেক অলরাউন্ডার অলক কাপালি।

অলক নিজেই জানিয়েছেন বিষয়টি তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। শুরু থেকে আয়োজনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকলেও যখন শেষ পর্যায়ে দেখা গেল লিগ আয়োজন নিয়ে যে সব ক্লাব সংগঠক ও ক্রীড়া কর্মকর্তা বিরোধিতা করে এসেছেন তারাই ঢুকে পড়েছেন টুর্নামেন্ট কমিটিতে। তখন নীরবে তিনি সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

সিলেট মিরর-এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের ক্ষোভ ও অভিমানের কথা জানান বাংলাদেশ দলের এক সময়ের অপরিহার্য ক্রিকেটার অলক। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন আমাকে কথা দিয়েছিল। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত কমিটমেন্টের জায়গা থেকে সরে আসায় আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকাটা আমার কাছে আর যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে না। তাই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ 

টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট টুর্নামেন্টে স্টার প্যাসিফিক স্ট্রাইকার দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অলক কাপালি। আপাতত স্রেফ একজন ক্রিকেটার হিসেবেই তিনি খেলে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নতুনরা উঠে আসছে না বলে সিনিয়র ক্রিকেটারদের দোষারোপ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে মাঠে খেলা নেই। লিগ না হলে নতুনরা নিজেদের প্রমাণ করবে কিভাবে? লিগ আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ক্লাব কর্মকর্তাদের কাছে দিনের পর দিন ধর্ণা দিয়েছি। কিন্তু তারপরও লিগ শুরু করা সম্ভব হয়নি। ক্রিকেটকে মাঠে ফেরাতেই তাই এ টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিই আমরা।’ 

অন্তর থেকে চাইলে যে কোনো কিছু করা সম্ভবএই মেসেজটা আমরা ক্লাব কর্মকর্তা ও লিগ সংশ্লিষ্টদের দিতে চেয়েছি। যে কারণে এই উদ্যোগের সঙ্গে তাদের যুক্ত করা হবে না এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল জানিয়ে অলক বলেন, ‘সিলেট ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন আমাকে কথা দিয়েছিল এটি তারা করবে। যে কারণে সংগঠন যাতে সফল হয় সেজন্য আমি সংগঠনের উপদেষ্টা হলেও শুরু থেকে কমিটির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছি। অর্থ ও স্পন্সরের জন্য তারা যেখানে বলেছে সেখানে গিয়েছি। সিলেটের মেয়র থেকে শুরু করে অনেকের কাছে গেছি।’ তিনি বলেন, ‘নাদেল ভাই (শফিউল আলম চৌধুরী) বিসিবির পরিচালক, সেলিম ভাই (মাহিউদ্দিন সেলিম) জেলা ক্রীড়া সংস্থার (ডিএসএ) সেক্রেটারি, তারা থাকবেন। কিন্তু যেসব ক্লাব সংগঠক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বরাবরই লিগ আয়োজনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, অনীহা দেখিয়েছেন তাদের টুর্নামেন্ট আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে না বলে আমাকে কথা দিয়েছিল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন। যে কারণে আমি তাদের সঙ্গে ডোর টু ডোর গিয়েছি স্পন্সরের জন্য। সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে এ কাজ আমার নয়। তবুও করেছি ক্রিকেটের স্বার্থে।’ কিন্তু ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন কথা রাখেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যেসব ক্লাব ও ক্রীড়া কর্মকর্তাকে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন, শেষ মুহূর্তে তারাই ঢুকে পড়েছেন টুর্নামেন্ট কমিটিতে। সুতরাং টুর্নামেন্ট আয়োজনের মূল লক্ষ্যই পূরণ হচ্ছে না। তাই আমি আর এর সঙ্গে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

টুর্নামেন্ট সফলে সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটের স্বার্থে আমি কম পারিশ্রমিকে টুর্নামেন্টে খেলছি। এত কম পারিশ্রমিকে আমি খেলি না। তবুও চেয়েছি অন্তত একটা জবাব দিতে। কিন্তু ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন আমাকে হতাশ করেছে।’

করোনা পরিস্থিতির কারণেও ক্রিকেট লিগ পেছানো হয়েছিল। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘করোনার বিষয়টি যে কেবলমাত্র অজুহাত ছিল তা এখন প্রমাণিত। কারণ যারা তখন লিগ আয়োজনের ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন তারাই এখন এ টুর্নামেন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এখন কি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে?’

 

 

এএফ/০১