শ্রীমঙ্গলে অসামাজিক কাজ করানোর দায়ে নারী গ্রেপ্তার

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি


ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
০৯:২৬ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
০৯:৩৪ অপরাহ্ন



শ্রীমঙ্গলে অসামাজিক কাজ করানোর দায়ে নারী গ্রেপ্তার

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নারীদের ধরে এনে জোর করে পতিতাবৃত্তিতে নামায় আছমা। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে নিজ বসতবাড়িতেই সে গড়ে তুলেছে দেহ ব্যবসা ও মানবপাচারের আস্তানা। 

তার যৌনপল্লির নারীরাই শ্রীমঙ্গলসহ দেশের বিভিন্ন হোটেল রিসোর্টে ভাড়ায় পাঠানো হতো। ভয়ংকর এই পতিতা সর্দারকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

শ্রীমঙ্গল থানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গোপন সংবাদ পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে শহরের গুহরোড এলাকা থেকে আছমাকে (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়। 

সে পতিতাবৃত্তির উদ্দেশে নারীপাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আছমা শহরতলীর সূরভী পাড়া এলাকার নূর মিয়ার স্ত্রী। 

শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইউসুফ আলী জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে পতিতাবৃত্তির অভিযোগে পুলিশ শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় অবস্থিত আছমার বাসায় অভিযান চালায়। 

এসময় সেখান থেকে ২ নারী ও ২ পুরুষ খদ্দেরকে আটক করে তারা। এর আগেই সেখান থেকে কৌশলে সটকে পড়েন মূল হোতা আছমা। 

তিনি জানান, ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা একটি সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী অপরাধচক্র বলে স্বীকার করে। 

আসামিরা ওই স্থানে টাকার বিনিময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীদের এনে পতিতাবৃত্তির উদ্দেশে পাচার করে থাকে। 

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার সূত্র ধরেই বুধবার রাতে আছমা পুলিশের জালে ধরা পড়ে। 

শ্রীমঙ্গল শহরের বিরাহিমপুরের বাসিন্দা সোলায়মান আহমেদ বলেন, আছমা দীর্ঘদিন ধরে শ্রীমঙ্গলে পতিতাবৃত্তি করে আসছে।দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নারীদের নিয়ে এসে জোর করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করানো হয়। এর আগেও কয়েকবার পুলিশের হাতে আটক হলেও ছাড়া পেয়ে আবারো পুরোনো কাজে ফিরে আসেন এই নারী। 

হাউজিং এস্টেট এলাকার বাসিন্দা রুহেল আহমেদ বলেন, ‘আছমা তার বসতবাড়ি যৌনপল্লী বানিয়ে ফেলার পাশাপাশি বিভিন্ন আবাসিক হোটেল রিসোর্টেও নারী সরবরাহ কাজে লিপ্ত।’ 

স্থানীয় সৈয়দ আবু জাফর সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এই সেই কুখ্যাত আছমা আজ রাতে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। এই নারী যুবসমাজ, মেয়েদের জোর করে পতিতাবৃত্তি কাজে নিয়োগ সহ বহু মানুষের জীবন ধ্বংসের কারিগর। শ্রীমঙ্গলবাসীর দাবী আছমাকে রিমান্ডে এনে তাকে কারা এতোদিন নিরাপত্তা দিয়েছিল, কারা তার গডফাদার তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করা। কারা মাসিক চাঁদা নিতো তার নিকট থেকে তাদের নামের তালিকা এবং সে শহরের কোন কোন হোটেল, রিসোর্টে পতিতা সাপ্লাই করত তাও প্রকাশ করা। আল্লাহ আমাদেরকে এই গজব থেকে হেফাজত করুন।’

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুস ছালেক বলেন, ‘আছমা পতিতাবৃত্তির উদ্দেশে নারীপাচারকারী চক্রের হোতা। তিনি দীর্ঘদিন থেকে অসামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত। আছমাসহ তার সংঘবদ্ধচক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

এস এইচ/বি এন-০৩