নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
০১:০৫ অপরাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
০১:৩১ অপরাহ্ন
সোহেল মিয়া
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ঘোলডুবা গ্রামের মৃত আতর আলীর পুত্র সোহেল মিয়া তার আপন চাচি যুক্তরাজ্য প্রবাসী নাজমা খানমকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ ও নাজমা খানমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নাজমা খানমের স্বামী ঘোলডুবা গ্রামের ইন্তাজ উল্লাহর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী মকদ্দুছ মিয়া ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী কিডনী রোগে আক্রান্ত নাজমা খানম নিজের চিকিৎসার কাজে ব্যয়ের জন্য স্বামীর ক্রয়কৃত নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডের ১৩.৬২ শতক ভূমি তাদেরই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মরহুম উরুপ মিয়ার পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী আল হেলালের নিকট ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি সাব্যস্ত করেন এবং নগদ ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করে তিনি ওই জায়গার বিপরীতে একটি লিখিত চুক্তি করে জায়গাটি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে দায়িত্বে থাকা তার কেয়ারটেকার কুর্শি ইউনিয়নের এনাতাবাদ গ্রামের রুকু মিয়া আল হেলালের ভাগ্নে রাজিবের কাছে বুঝিয়ে দেন। রাজিব দখল বুঝে দোকানঘরে তালা লাগিয়ে তার বাসায় চলে যান। এ খবর জানতে পেরে সোহেল শহরতলীর ওই জায়গার সামনের দোকানঘরের তালা ভেঙে দোকানঘরটি দখল করে নেন। এ নিয়ে আল হেলালের ভাগ্নে রাজিব সোহেলের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে নবীগঞ্জ থানার একজন এসআই সোহেলকে কয়েক দফায় থানায় আসার জন্য খবর দিলেও তিনি আসেননি।
পরবর্তীতে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান তাকে ফোন দিলে গত শুক্রবার তিনি নবীগঞ্জ থানায় হাজির হন। ওই সময় সোহেল ওসিকে জানান, ওই জায়গা ২০০৮ সালে তার চাচা মকদ্দুছ মিয়া তাকে দানপত্র দলিল করে দিয়ে গেছেন। এ সময় তিনি আরও জানান, যদি আল হেলাল রেজিস্ট্রি দলিল দেখাতে পারেন তাহলে তিনি দোকান ছেড়ে দেবেন। এ সময় ওসির কক্ষে উপস্থিত ছিলেন, নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মিঠুসহ ঘোলডুবা গ্রামের মুরব্বিগণ। এ সময় ওসি তাকে কাগজ দেখাতে বললে তিনি জানান, কাগজ আদালতে জমা আছে। তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার কাগজ দেখাবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবারও ওসির কক্ষে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসেন ওসি আজিজুর রহমান। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিমও উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় সোহেল কোনো রেজিস্ট্রি দানপত্র দলিল দেখাতে পারেননি। তবে তিনি চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি আদালতে একটি মামলা দায়েরের কাগজ দেখান। মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ওই জায়গা তার চাচা তাকে মৌখিকভাবে দান করে গেছেন।
এদিকে সোহেলের চাচী নাজমা খানম জানান, তার ভাসুরের ছেলে সোহেল তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। চাঁদা দিলে তিনি জায়গা ছেড়ে দেবেন। আর বেশি বাড়াবাড়ি করলে সোহেল ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলেও তিনি জানান।
নাজমা খানম জানান, অসুস্থতা ও করোনার কারণে দেশে আসতে না পারায় তিনি ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর আল হেলালের সঙ্গে একটি লিখিত চুক্তি করেন যেখানে সোহেলের আপন ভাই শিবলু মিয়া ও ফুফাতো ভাই জামাল উদ্দিন স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন। এখন সোহেলের এমন কর্মকাণ্ডে চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি। তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা চেয়েছেন।
এ ব্যাপারে কথা বলতে অভিযুক্ত সোহেল মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এএম/আরআর-০৪