সনদ জালিয়াতির দায়ে চাকরি হারালেন শিক্ষক

এস এম রাকিব, মাধবপুর


মার্চ ০২, ২০২১
০৮:২১ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০২, ২০২১
০৮:২১ অপরাহ্ন



সনদ জালিয়াতির দায়ে চাকরি হারালেন শিক্ষক

নিশু রঞ্জন দাশ

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সনদ জাল প্রমাণিত হওয়ায় হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় নিশু রঞ্জন দাশ নামের এক শিক্ষককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে শিক্ষা অফিস। তিনি উপজেলার আন্দিউড়া ইউনিয়নের হাজী মিয়া চাঁন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান এক চিঠি দিয়ে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে প্রেরণ করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাধবপুর উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান জানান, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় কার্যালয় সিলেট থেকে জারি করা এক অফিস আদেশের ভিত্তিতে তিনি এ চিঠি দিয়ে ওই শিক্ষককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বিভাগীয় কার্যালয়ের আদেশে বলা হয় ‘অভিযুক্ত শিক্ষকের লিখিত জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিতে শিক্ষকের জবানবন্দি, সকল তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় নিশু রঞ্জন দাশের এইচএসসি পরীক্ষার ২.৬০ ফলাফল বিশিষ্ট সনদপত্র এবং একাডেমিক ট্রানস্ক্রিপট সন্দেহাতীতভাবে জাল প্রমাণিত হওয়ায় যোগ্যতাবিহীন ‘সহকারী শিক্ষক’ হিসেবে পদ অবনমিতকরণ করে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৪(৩) উপবিধি (খ) উপবিধি অনুযায়ী তাকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর’ প্রদান করা হলো।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল উপজেলার হরিশ্যামা সরকারি (জাতীকরণকৃত) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক নিশু রঞ্জন দাশের (পরবর্তীতে হাজী মিয়া চাঁন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক) বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ এনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্বপেন্দ্র চন্দ্র পাল। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত শুরু করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তাদের তদন্তে সনদ জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হয়। পরে বিভাগীয় উপ-পরিচালক অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ এবং তদন্তের জন্য ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। এ কমিটির তদন্তেও সনদ জালের বিষয়টি প্রমাণিত হয়।

২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি লিখেন বিভাগীয় উপ-পরিচালক। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে ডিজি অফিস পুনরায় ডিডিকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে। এরই প্রেক্ষিতে উপ-পরিচালক ওই শিক্ষককে ‘পদ অবনমিতকরণ’ ও ‘বাধ্যতামূলক অবসর’ প্রদান করে অফিস আদেশ জারি করেন।

এ বিষয়ে উপ-পরিচালক মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নিশু রঞ্জন দাশ নিয়োগের সময় তার এইচএসসি সনদে ১.৬ কে পরিবর্তন করে ২.৬ বিশিষ্ট জাল সনদ জমা দিয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে সব ধরনের তদন্তে প্রমাণিত হয়। এ কারণেই তাকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়েছে।’

আর এ ব্যাপারে শিক্ষক নিশু রঞ্জন দাশ জানান, তিনি অসুস্থ। তবে এ আদেশের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করবেন। এর বেশি কিছু তিনি বলতে চাননি তিনি।

 

এসএম/আরআর-০৪