দিরাইয়ে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

দিরাই প্রতিনিধি


মে ০৮, ২০২১
০৬:১৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ০৮, ২০২১
০৬:১৯ পূর্বাহ্ন



দিরাইয়ে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের ভাঙ্গাডহর (মঙ্গলপুর) এলাকা থেকে উদ্ধারকৃত মস্তকহীন খন্ড খন্ড লাশটি পার্শ্ববর্তী  গ্রামের দিনমজুর দুদু মিয়ার দাবি করে  হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলসহ মানববন্ধন করেছেন দুদু মিয়ার স্বজন ও এলাকার লোকজন। 

শুক্রবার (৭ মে) বেলা ৩টায় পৌরসভাস্থ থানা পয়েন্টে দিরাই প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে জুমার নামাজের পর ভাঙ্গাডহর, ডাইয়ারগাঁও, ইসলামপুর ও নরোত্তমপুর গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার শতাধিক মানুষ দিরাই বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি বাজার প্রদক্ষিণ করে থানা পয়েন্টে এসে মানববন্ধন কর্মসূচিতে মিলিত হয়। এতে বক্তব্য দেন নিহত দুদু মিয়ার ছেলে তানভির মিয়া, নিহতের ভাই নোয়াব মিয়া ও ছোয়াব মিয়া, আবদুল হক মিয়া, ইউপি সদস্য শেখ ফরিদ, লালন মিয়া প্রমুখ।

জানা গেছে,গত ১ মে রাতে দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামের বিলের একটি ডোবা থেকে মস্তকবিহীন ৫ টুকরো অজ্ঞাত একটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন সকালে এলাকার একটি পুকুরপাড় থেকে লাশের ক্ষতবিক্ষত মাথা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও স্থানীয়রা ধারণা করছিলেন টুকরো টুকরো লাশগুলো মঙ্গলপুর গ্রামের নিখোঁজ দুদু মিয়ার। কেননা গত ২৯ এপ্রিল বেলা ২টা থেকে নিখোঁজ ছিলেন দুদু মিয়া (৪১)। উদ্ধারকৃত লাশের পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখে সন্তানরা দুদু মিয়ার লাশ বলে দাবি করেন।

এদিকে, গত মঙ্গলবার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির ৬ টুকরো ভাসমান লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এক নারীসহ ৬ জনকে আটক করে র‌্যাব-৯ সুনামগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা। এরপর গভীর রাতে দিরাই থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় আটককৃতদের। আটককৃতরা হলেন- ইসলামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাইয়ুমের স্ত্রী আল বাহার বেগম (৩৫), ভাঙ্গাডহর গ্রামের মৃত জলধর দাসের ছেলে সত্যরঞ্জন দাস (৫৫), নরোত্তমপুর গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে নাসির উদ্দিন (৩৫), দাউদপুর গ্রামে মৃত তোয়াহিত মিয়ার ছেলের নাজমুল হুসাইন (৪৯), নরোত্তমপুর গ্রামের মুসলিম উল্লাহ’র ছেলে লুৎফর রহমান (৩৫) ও ভাঙ্গাডহর গ্রামের মকবুল আলীর ছেলে আব্দুল মালেক (৩০)। আটককৃতরা জেলহাজতে রয়েছেন।

র‌্যাব-৯ সুনামগঞ্জ ক্যাম্পের অধিনায়ক লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আটককৃত ৬ জন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। দাউদপুর গ্রামের মো. কবির মিয়ার সঙ্গে দুদু মিয়ার আর্থিক লেনদেন নিয়ে শত্রুতার জের ধরে এবং দুদু কর্তৃক সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও অপমানিত হওয়ার জেরে কবির সহযোগীদের নিয়ে দুদু মিয়াকে হত্যা করেন। পরে লাশ কেটে টুকরো টুকরো করে বিলে ফেলে দেন। এ ঘটনায় সন্দেহভাজনদের আটক করা হলেও মূল হোতা আটককৃত নাজমুলের ভাই কবির মিয়া ও তার সহযোগী ভাঙ্গাডহর গ্রামের রইছ আলীর ছেলে দোলন মিয়া পলাতক রয়েছেন। অজ্ঞাত লাশের টুকরো উদ্ধার ও জড়িত ৬ জন আটকের ঘটনায় দিরাই থানার এসআই আজিজুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

 

এএইচ/আরআর-১৩