অন্তঃসত্ত্বা নারীর লাশ উদ্ধার, স্বামী আটক

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি


মে ১২, ২০২১
০২:৪১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ১২, ২০২১
০২:৪১ পূর্বাহ্ন



অন্তঃসত্ত্বা নারীর লাশ উদ্ধার, স্বামী আটক

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্ব তিমিরপুর গ্রাম থেকে মঙ্গলবার (১১ মে) সন্ধ্যায় ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী আঁখি আক্তারের (১৯) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আঁখির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বুধবার (১২ মে) হবিগঞ্জ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হবে বলে জানা গেছে। 

এদিকে, এ ঘটনায় আঁখির স্বামী বিজয় মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে নবীগঞ্জ থানার পুলিশ। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতিও চলছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের ফজল মিয়ার ছেলে বিজয় মিয়া (২৪) ভালোবেসে এক বছর আগে বিয়ে করেন একই গ্রামের ছায়েদ মিয়ার মেয়ে আঁখি আক্তারকে (১৯)। প্রেম করে বিয়ে করায় এবং মেয়ের পরিবারকে ছোট জাত আখ্যা দিয়ে ছেলের পরিবার প্রথমে তাদের বাড়িতে জায়গা দেয়নি। কিছুদিন পর ছেলেকে স্ত্রীসহ থাকার জন্য বাড়ির পাশে আলাদা ঘর নির্মাণ করে দেন বিজয় মিয়ার পিতা ফজল মিয়া। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য আঁখি আক্তারকে মারধর শুরু করেন তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি। খবর পেয়ে মেয়ের বাবা একাধিকবার তাদের বাড়িতে মেয়েকে দেখতে যেতে চাইলে স্বামীর পরিবার সেই সুযোগ দেয়নি। আর প্রায় সময়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।

মঙ্গলবার ইফতারের ১০ মিনিট পূর্বে স্বামী বিজয় মিয়া তার শ্বশুর ছায়েদ মিয়ার মোবাইল নম্বরে ফোন করে বুধবার সকালে তাদের বাড়িতে যেতে বলেন এবং তার মেয়ে আঁখির বিচার করে মেয়েকে নিজের সঙ্গে নিয়ে যেতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পরই মেয়ের বাবা খবর পান তার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তিনি হাসপাতাল গেলে মেয়ের মৃতদেহ হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার এসআই সমীরন দাশ একদল পুলিশ নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখানে সুরতহাল তৈরি শেষে লাশ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

এ ব্যাপারে আঁখির স্বামী বিজয় মিয়া জানান, স্ত্রীর সঙ্গে মঙ্গলবার বিকেলের দিকে তার ঝগড়া হয়। সন্ধ্যার দিকে ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় আঁখিকে দেখতে পেয়ে তাকে নামিয়ে হাসপাতাল নিয়ে যান তারা। তবে কী কারণে ঝগড়া হয়েছে তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি বিজয়।

এদিকে, আঁখির বাবা ছায়েদ মিয়া আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি বিয়ের ১ বছরের মধ্যে দুইবার আঁখির গর্ভের সন্তান নষ্ট করার অভিযোগ এনেছেন তার বাবা। মৃত্যুর সময় আঁখি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে এসআই সমীরন দাশ বলেন, মৃতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তিসাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

এএম/আরআর-১০