ওসমানীনগর প্রতিনিধি
জুন ০২, ২০২১
০৫:৩৩ অপরাহ্ন
আপডেট : জুন ০২, ২০২১
০৫:৩৩ অপরাহ্ন
সিলেট-২ আসনের (ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) সাংসদ মোকাব্বির খান নির্বাচিত হওয়ার পর সিন্ডিকেট গড়েছেন। ওসমানীনগর উপজেলার চিহ্নিত রাজাকারদের উত্তরসূরিদের নিয়ে তিনি জোট বেঁধেছেন। সরকারি অর্থ লুটপাট, স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে আঁতাত, জামায়াত-শিবির অনুসারীদের পুনর্বাসন ছাড়াও নানা অনিয়ম করেছেন। এসবের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১ জুন) বিকেলে ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্থানীয় সংবাদ সম্মেলন এসব মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। গোয়ালাবাজারে একটি রেস্তোরাঁয় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যের কপিতে সাধারণ সম্পাদকসহ উপজেলা কমিটির সভাপতি আতাউর রহমানের স্বাক্ষর রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাংসদ মোকাব্বিরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়। তার সঙ্গে যারা আছেন, তাদের ২জনকে রাজাকারের উত্তরসূরি দাবি করে বলা হয়, এমপি মোকাব্বির হাটে–ঘাটে প্রচার করে চলেছেন, অতীতে তিনি ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ করেছেন। আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডে তার নিকটজন রয়েছেন এমন প্রচারণার মাধ্যমে বিভ্রান্ত করছেন প্রশাসনে থাকা লোকজনকে। সরকারি অর্থ লুটসহ নানা অনিয়ম করে যাচ্ছেন বেপরোয়াভাবে। ওসমানীনগর উপজেলার ৮ ইউনিয়নের জন্য আসা এমপি মোকাব্বিরের সরকারি বরাদ্দ নিয়ামনীতির তোয়াক্কা না করে লুটেপুটে খেয়েছেন। জোটবদ্ধ হয়ে এই লুটপাট করেছেন এমপির পিএস কয়েছ মিয়া, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবদাল মিয়া ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান এমরান রব্বানী।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ওসমানীনগরে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনে জায়গা নির্ধারণের জন্য পত্র আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন ইউএনও তাহমিনা আক্তার। উপজেলা সদরে টেকনিক্যাল কলেজ হচ্ছে বিষয়টি জানতে পেরে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বড় অঙ্কের টাকা ইনকামের মিশনে নামেন এমপি মোকাব্বিরের ব্যক্তিগত সহকারী কয়েছ মিয়ার যোগসাজশে একটি চক্র। বড় অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের জন্য জায়গা খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে একজনের সঙ্গে অদৃশ্য চুক্তি হয়। এই চুক্তি বাস্তবায়নে উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানে গোচারণ ভূমিতে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি তদন্ত করলেই সত্যতা পাওয়া যাবে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মে সিলেট শহরে সিলেট-২ আসন (ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) থেকে নির্বাচিত গণফোরামের সাংসদ মোকাব্বির খান তাঁর নির্বাচনী এলাকা ওসমানীনগর উপজেলায় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন। সিন্ডিকেটে কারা—এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে সাংসদ তা উল্লেখ করেননি। এ নিয়ে প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেছিলেন, এত প্রভাবশালী সিন্ডিকেট, নাম নিতেও ভয় পাচ্ছি। সাংসদ মোকাব্বিরের সংবাদ সম্মেলনে বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া, তাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমরান রব্বানী, দয়ামীর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা নুর উদ্দিন আহমদ নুনু, প্রবাসী গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।
ইউডি/বিএ-০৭