তাহিরপুরে ভাড়াটে খুনি দিয়ে ছেলেকে হত্যা, বাবা গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি


জুন ২৫, ২০২১
১২:৫২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ২৫, ২০২১
১২:৫২ পূর্বাহ্ন



তাহিরপুরে ভাড়াটে খুনি দিয়ে ছেলেকে হত্যা, বাবা গ্রেপ্তার

মোহাম্মদ আলী

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে মাদকাসক্ত ছেলেকে পেশাদার খুনি ভাড়া করে খুন করিয়েছেন বাবা। এ ঘটনায় বুধবার (২৩ জুন) রাতে বাবা মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সুনামগঞ্জ বিচারালয়ের তাহিরপুরের আমল গ্রহণকারী আদালতের বিচারক খালেদ মিয়া ছেলেকে খুনের দায়ে গ্রেপ্তারকৃত বাবাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, গত ২১ মে তাহিরপুরের উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মাহারাম নদীর পাড়ে মাহারাম গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (২৮) খুন হন। খুনের ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমের বাবা মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে প্রতিবেশী আহসান হাবিব (২২), মো. সোলাইমান (২২) ও পাশের করইতলা গ্রামের তৌফিকুল ইসলাম ভুঁইয়াকে (২৮) আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর এই তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তারা খুনের সঙ্গে জড়িত কি না এ নিয়ে সন্দেহ হয় পুলিশের। পরে পুলিশ সুরুজ মিয়া (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে।

সুরুজ মিয়া পুলিশের কাছে স্বীকার করেন ওই খুনের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। তিনি জানান, জাহাঙ্গীর আলম নেশাগ্রস্ত ছিলেন। তিনি তার পরিবারের লোকজনকে অত্যাচার করতেন। জাহাঙ্গীরের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে তার বাবা মোহাম্মদ আলী পেশাদার অপরাধী সুরুজ মিয়া ও সেকান্দার আলীকে ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করেন। সুরুজ মিয়া এর আগে ২টি খুনের মামলায় ১৭ বছর জেলে ছিলেন এবং সেকান্দার আলীও ডাকাতির মামলায় জেল খেটেছেন।

জানা গেছে, খুনের ঘটনার আগে সুরুজ মিয়া ৫০০ টাকা দেওয়ার কথা বলে জাহাঙ্গীরকে মাহারাম নদীর পাড়ে ডেকে আনেন। জাহাঙ্গীরকে খুন করার পর সুরুজ মিয়া মোবাইলে ছেলে জাহাঙ্গীরকে খুনের কথা জানান তার বাবা মোহাম্মদ আলীকে। পরে গ্রেপ্তারকৃত সুরুজ মিয়াকে আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই হত্যাকাণ্ডের সকল তথ্য জানান তিনি। পুলিশ অপর খুনী সেকান্দার আলীকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তিনিও আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করা পেশাদার অপরাধী দিয়ে ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে খুন করিয়ে মোহাম্মদ আলী তার প্রতিবেশী মাহারাম গ্রামের আহসান হাবিব ও মো. সোলাইমান এবং পাশের করইতলা গ্রামের তৌফিকুলকে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে মোহাম্মদ আলীর জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছেন। তিনি জানান, পুত্রকে খুন করানোর দায়ে বাবা মোহাম্মদ আলী এবং অন্য দুই পেশাদার খুনিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। মোহাম্মদ আলীকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হবে।


এএম/আরআর-০৪