বড়লেখা প্রতিনিধি
জুলাই ২৫, ২০২১
০৯:৩৬ অপরাহ্ন
আপডেট : জুলাই ২৫, ২০২১
১০:৪৬ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মসজিদের নামকরণ নিয়ে বিরোধের জেরে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নারীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার (২৪ জুলাই) আছরের নামাজের পর উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের সুজানগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর।
তাদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় উভয়পক্ষ বড়লেখা থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা করেছেন।
আহতরা হলেন- সাজ্জাদ হোসেন, আজাদ হোসেন, আবিদ আহমদ, এমাদ হোসেন, আলিম উদ্দিন, মওরুন বেগম, শিপা বেগম, জাবের আহমদ, বকুল বক্স, সুকরাম বিন আলা বক্স, মহসিন আলী, আজিজুর রহমান প্রমুখ।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের সুজানগর গ্রামের একটি মসজিদের নামকরণ নিয়ে এলাকার সাজ্জাদ হোসেন ও আনছারুল হক পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্ধ চলছে।
একপক্ষ চাইছে গ্রামের জামে মসজিদের নাম ‘সুজানগর জামে মসজিদ’ রাখতে আর অপরপক্ষ চাইছে ‘বক্সবাড়ি জামে মসজিদ’ নাম রাখতে। নামকরণের বিষয়টি নিয়ে গত বছরের আগস্ট মাসে একটি বৈঠক হয়।
বৈঠকে স্থানীয়রা মসজিদের নামকরণের রেকর্ড (দলিল ও পর্চা) দেখে ‘সুজানগর জামে মসজিদ’ নাম রাখার সিদ্ধান্ত দেন এবং উভয়পক্ষকে বিষয়টি নিয়ে আর কোনো প্রকার বিরোধে না ঝড়াতে বলেন। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি।
এরই জের ধরে গত শনিবার আছরের নামাজের পর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে নারীসহ উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হন।
খবর পেয়ে বড়লেখা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছেন।
সাজ্জাদ হোসেন পক্ষের মক্তদির আলী বাদী হয়ে অপর পক্ষের ফয়ছল বক্সকে প্রধান আসামি করে ২৩ জনের নামোল্লেখ করে একটি মামলা করেন।
তাদের অভিযোগ, শনিবার বিকেলে আজিমগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে সাজ্জাদ হোসেন পক্ষের আবিদ আহমদ ও আলিম উদ্দিনের ওপর আনছারুল হকের নেতৃত্বে হামলা করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। অন্যদিকে আনছারুল হকের পক্ষের মো. আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে সাজ্জাদ হোসেনকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নামোল্লেখ করে পৃথক আরেকটি মামলা করেন।
আনছারুল হক পক্ষের অভিযোগ মসজিদ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে লোকজন শনিবার বিকেলে ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ওপর হামলা করেছে।
বড়লেখা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বতে থাকা চিকিৎসক অমিত আচার্য্য জানান, সংঘর্ষে আহত ১২ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার সন্ধ্যার পর তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আরও ৩-৪ জন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার রোববার বিকেলে বলেন, ‘মসজিদের নামকরণ নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এর জের ধরে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
এ জে/বি এন -০৯