দ্বিতীয় ডোজ না নিয়েও ৮৫৮ জন পেলেন টিকার সনদ!

আনোয়ার হোসেন মিঠু, নবীগঞ্জ


সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
০৮:৫৩ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
১০:২৪ অপরাহ্ন



দ্বিতীয় ডোজ না নিয়েও ৮৫৮ জন পেলেন টিকার সনদ!

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ না নিয়েও ৮৫৮ জনের সনদ প্রস্তুত হয়েছে বলে জানা গেছে। মুঠোফোনে এসেছে টিকাগ্রহণ সম্পন্নের বার্তাও (এসএমএস)। মুঠোফোনে বার্তা পেয়ে অনেকেই ডাউনলোড করে নিয়েছেন টিকার সনদ। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, সার্ভার জটিলতা ও টিকাগ্রহণকারীর টিকা কার্ডের কিউআর কোড স্ক্যান না করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ না নিয়েও বার্তা পাওয়াদের শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে। তাদের টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ আগস্ট গণটিকা কর্মসূচিতে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকাদান কেন্দ্রে এসে ৭ হাজার ৭৯০ জন প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছিলেন। এর ঠিক ১ মাস পর গত মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় ডোজ টিকাগ্রহণ করেন ৬ হাজার ৯৩২ জন। ওইদিন টিকা নিতে আসেননি প্রথম ডোজ নেওয়া ৮৫৮ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নিতে আসা কিছু মানুষের কার্ডের কিউআর কোড স্ক্যান করা সম্ভব হয়নি। ফলে কারা টিকা নিয়েছেন তা শনাক্ত করা যায়নি। এর ফলে প্রথম ডোজ নেওয়া সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে মর্মে বার্তা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের দ্বিতীয় ডোজ না নেওয়া ৮৫৮ জনের কাছেও একই বার্তা পৌঁছেছে। তারা অনেকেই দ্বিতীয় ডোজ টিকাগ্রহণ না করেই সনদ ডাউনলোড করে নিয়েছেন।

দ্বিতীয় ডোজ না নিয়েও মুঠোফোনে বার্তা পাওয়া নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, আমি প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আগেই বার্তা আসে আমার দ্বিতীয় ডোজ টিকাগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

তোফায়েল আহমদ নামের আরেক ভুক্তভোগী বলেন, গত ৭ আগস্ট প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার আগেই টিকাগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এমন মেসেজ আসে আমার মোবাইলে। এতে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। সুরক্ষা অ্যাপে ঢুকে দেখি সনদও প্রস্তুত। পরে স্থানীয় একটি কম্পিউটারের দোকান থেকে সনদ প্রিন্ট করেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মচারী জানান, দ্বিতীয় ডোজ না নেওয়া ৮৫৮ জনের মুঠোফোনে বার্তা গেছে। তাদের অনেকেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করে দ্বিতীয় ডোজ টিকাগ্রহণ করছেন।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় ডোজ না নেওয়া অনেকের মুঠোফোনে বার্তা গেছে। এর মধ্যে অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমরা তাদেরকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিচ্ছি। সনদ পেলেও টিকা পেতে তাদের কোনো সমস্যা হবে না।

হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, জেলায় গণটিকা কর্মসূচিতে প্রথম ডোজ গ্রহীতাদের ৮৪ শতাংশের অধিক দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন। তবে কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। নবীগঞ্জের বিষয়টি জেনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


এএম/আরআর-১২