সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১
১২:২২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১
১২:৪২ পূর্বাহ্ন
হেফাজতে ইসলামের বিতর্কিত নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার ঘটনায় কারাগারে থাকা ঝুমন দাশ মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে সুনামগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। কারাগার থেকে বের হয়ে কারাফটকে অপেক্ষায় থাকা মা নিভা রানী দাশকে প্রণাম করেন ঝুমন। এ সময় মা নিভা রানী ছেলেকে চুম্বন করে জড়িয়ে ধরেন। ঝুমন দাশ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, রাজনৈতিক কর্মীসহ তার মুক্তির জন্য সহযোগিতাকারী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এ সময় ঝুমন দাশ বলেন, ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাবরণ করেছেন। আমি সামান্য মানুষ ২০০ দিন কারাভোগ করেছি। সকলের প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসতে পেরেছি। এর বেশি মন্তব্য করতে রাজি নই।
ঝুমনের মা নিভা রানী দাশ বললেন, আমরা খুশি। আমার ছেলেটা নিঃশর্ত মুক্তি পেলে আরও বেশি খুশি হতাম। গত প্রায় ৭ মাস আতঙ্ক, উৎকণ্ঠায় দিন কেটেছে। এখন আমরা নিরাপত্তা চাই। পরিবার ও ঝুমনকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই।
এর আগে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার ঝুমন দাশের জামিন মঞ্জুর করেন। শর্তসাপেক্ষে এক বছরের জামিন দেওয়া হয় ঝুমনকে। এই সময়ে আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি সুনামগঞ্জের বাইরে যেতে পারবেন না।
গতকাল সোমবার সকালে একই আদালত তার মুক্তির আদেশে স্বাক্ষর করলে সকল প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে মুক্তি পান ঝুমন। জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সুনামগঞ্জ জেলা শাখা ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সুনামগঞ্জ জেলা সংসদ।
সুনামগঞ্জ কারাগারের জেলার শরিফুল ইসলাম বলেন, আদালতের আদেশে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝুমন মুক্তি পেয়েছেন।
শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাশের ফেসবুক আইডি থেকে হেফাজত ইসলামের বিতর্কিত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে সমালোচনা করে গত ১৬ মার্চ ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়ায় হেফাজতে ইসলামের সমর্থকরা পরদিন ১৭ মার্চ হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮টি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর করে। গ্রামের ৫টি মন্দিরও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। মামলাগুলো তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। তিন মামলায় গ্রেপ্তার ও আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হওয়াসহ ১১৩ জন আইনের আওতায় এসেছেন। হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের মামলার আসামি ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়াসহ অধিকাংশ আসামি আদালত থেকে ইতোমধ্যে জামিন পেয়েছেন।
এএম/আরআর-০৪