নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ১৬, ২০২১
০৬:০১ অপরাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ১৬, ২০২১
০৬:০২ অপরাহ্ন
করোনার কারণে মানুষের আয়-রোজগারে যখন টান পড়েছে তখন হু হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। চাল, ডাল, তেল, লবণ, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, তরিতরকারি, মাছ-মাংস, পোল্ট্রি মুরগি, ডিম, চিনি, দুধ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিদিন। এসব পণ্য ক্রয় করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য।
নগরের বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে যাওয়া নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। বাজারে গিয়ে তাদের আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এর পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিলও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
নগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি। বাজারে মুরগির দাম বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে আরও অন্তত ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার নগরের বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ টাকা থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায়; লেয়ার মুরগি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩৬০ টাকা, পাকিস্তানি কর্ক ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় মুরগির সরবরাহ অনেক কম, যে কারণে দাম বাড়ছে। কেউ কেউ বলছে, বাচ্চার দাম বাড়ায় খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়েছেন।
বাজারে বড়দানার ভারতীয় মশুর ডাল ১০০ টাকা এবং মাঝারি দানার মশুর ডাল ১১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তারা জানান, এক সপ্তাহের মশুর ডালের দাম কেজিতে অন্তত পাঁচ টাকা বেড়েছে।
বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা ও কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়।
গত বৃহস্পতিবার পেঁয়াজের আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণার পরের দিন শুক্রবার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান।
গত ২০ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। ২০ দিন আগেও যে পেঁয়াজ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা এক লাফে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি হয়ে গিয়েছিল।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। কাঁচামরিচের কেজি ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। বাজারে সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে বলে কাঁচামরিচের দাম কমছে বলে জানান তারা।
বাজারে আমদানি করা রসুন ১১০ টাকা ও দেশি রসুন ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আদা ১৭০ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা, ছোট দানার ডাল ১২০ টাকা, চিনি ৮০ টাকা, খোলা আটা ৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। কোম্পানিভেদে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ১৫৫ টাকায়, খোলা সয়াবিন তেল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, শিম ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, শিম ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, করলা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা, পটল, ঢেঁড়স, কাকরোল, কচুর মুখি ও শশা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজিতে।
এ ছাড়া আলু ও পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা কেজিতে। এছাড়া চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া ও লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকায়।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রুই ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ টাকা, মৃগেল ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা, বাইম ৫০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি হালি মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায় আর হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়।
আরসি-১২