ফেঞ্চুগঞ্জে যাত্রীছাউনি এখন মিনি দোকান

শহীদ আহমদ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ


অক্টোবর ১৯, ২০২১
০২:৪৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ১৯, ২০২১
০২:৪৮ পূর্বাহ্ন



ফেঞ্চুগঞ্জে যাত্রীছাউনি এখন মিনি দোকান

সাধারণ যাত্রীদের কথা চিন্তা করে নির্মাণ করা হয়েছিল ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট-মৌলভীবাজার সড়কের পাশে দুটি যাত্রীছাউনি। সেই যাত্রীছাউনি এখন আর যাত্রীদের কোনো কাজে আসছে না। যাত্রীছাউনিগুলো দখল করে সেখানে মিনি দোকান বসিয়ে চলছে ব্যবসা। যাত্রীছাউনি দুটির মধ্যে একটির অবস্থান কুশিয়ারা ব্রিজ সংলগ্ন, অপরটির অবস্থান পালবাড়ি বাজারে। 

সাধারণ যাত্রীরা যাতে দূর-দূরান্ত থেকে এসে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে পারেন সেই লক্ষ্যে যাত্রীছাউনি নির্মাণ করা হয়েছিল। অথচ যাত্রীদের অভিযোগ, এসব যাত্রীছাউনিতে এখন বসা তো দূরের কথা ঢুকাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ ব্রিজের পাশের ছাউনির সম্মুখে রয়েছে তিনতিনটি পানের দোকান। এসব দেকানে সবসময় ক্রেতাদের জটলা লেগেই থাকে। তাদের ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করতে যাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অনেক সময় পুরুষদের গা ঘেঁষে নারী যাত্রীদের ছাউনিতে প্রবেশ করতে হয়। এতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের। অনেকে হয়রানির শিকার হয়েও লোকলজ্জার ভয়ে কিছু বলতে চান না। 

সরেজমিন গত বৃহস্পতিবার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার যাত্রীছাউনি দুটি ঘুরে দেখা যায়, পালবাড়ীতে অবস্থিত যাত্রীছাউনিতে বসার কোনো পরিবেশ নেই। চার পাশে দোকান, গাড়ির জটলা। তার মধ্যে বসার একটি বেঞ্চ ভেঙ্গে পড়েছে। ভবঘুরে মানুষের আড্ডার স্থানে পরিণত হয়েছে। যাত্রীদের আর বসার কোনো স্থান নেই। এমন অবস্থায় যাত্রীরা বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। 

রাজনগর থেকে আসা যাত্রী সোহরাব হোসেন তার মেয়েকে নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলাম, চলে যাচ্ছি।’ যাত্রীছাউনি রেখে এখানে কেনো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যাত্রীছাউনিতে বসার কোনো পরিবেশ নেই। গাড়িচালক আর মানুষের দখলে পুরো ছাউনি। তার উপর বেঞ্চ ভাঙা, বসার কোনো জায়গা নেই।’

কুশিয়ারা ব্রিজ সংলগ্ন যাত্রীছাউনির অবস্থা আরও খারাপ। ছাউনির প্রবেশমুখে তিনটি পান সিগারেটের দোকান। সব সময় গাড়িচালক আর বখাটদের আড্ডা লেগেই থাকে এখানে। দোকানের ক্রেতাদের ঠেলে যাত্রীদের ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। অনেক সময় লোকজন কম থাকলে গাঁজাখোররাও এখানে গাঁজা সেবন করে নেয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, নোংরা পরিবেশ, বসার কোনো অবস্থা নেই। তারপরও বাধ্য হয়ে অনেক সময় বসতে হয়। 

এ বিষয়ে কথা হয় যাত্রী মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে। সিলেট শহরে যাবেন তাই এখানে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। মনোয়ার বেগম বলেন, ‘যাত্রীছাউনি এখন দোকানে পরিণত হয়েছে। আমরা মহিলারা কীভাবে বসব এখানে? তারপর পুরুষদের ঠেলে এখানে ঢুকতে হয়। এসব কি দেখার কেউ নেই?

যাত্রীছাউনির পানের দোকানদার বকুল মিয়ার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি জানান, এখানকার দোকান সব স্থানীয় লোকদের মালিকানায়। যে যেখানে দোকানকোঠা বানিয়েছে সেটা তার দখলে রয়েছে। এখানে কাউকে ভাড়াও দিতে হয় না, কারও কাছ থেকে লিজও নিতে হয়নি। আমরা নিজেরাই দোকান করেছি।’

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহামন বলেন, ‘যাত্রীছাউনি যাত্রীদের বসার জন্য। কোনো অবস্থাতেই দোকান বসতে পারে না। এটা কোনো বখাটের আড্ডার জায়গা নয়। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরসি-১৫