‘ছাত্রলীগ নেতার’ এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক


অক্টোবর ২২, ২০২১
১২:৪৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ২২, ২০২১
১২:৪৫ পূর্বাহ্ন



‘ছাত্রলীগ নেতার’ এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে মৃত্যু

প্রাইভেটে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। মোটরসাইকেলে করে এগিয়ে দেওয়ার জন্য এসেছিলেন চাচাতো ভাই। বন্ধুর সঙ্গে দেখা করবেন বলে মোটরসাইকেল দাঁড় করিয়ে কলেজের ভেতরে যান। সেখানে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। প্রাইভেট শেষে আর বাড়ি যাওয়া হলো না কলেজ শিক্ষার্থী রাহাতের। 

আরিফুল ইসলাম রাহাত (১৮) ছিলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে কলেজের মূল ফটকের ভেতরে হত্যার শিকার হন তিনি। এই ঘটনায় সামসুদ্দোহা সাদি (২০) নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীর নাম ওঠে এসেছে। তিনি কাশ্মির গ্রুপ অনুসারী বলে জানা গেছে। এসময় সাদির সঙ্গে তানভীর নামে আরও একজন ছিল।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী সাদি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজর থানাধীন সিলাম পশ্চিমপাড়ার আব্দুস সালামের ছেলে এবং তার সঙ্গে থাকা তানভীর একই এলাকার জামাল মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনামতে জানা গেছে, রাহাত প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার উদ্দেশে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। এসময় চাচাতো ভাই রাফি তার সঙ্গে মোটরসাইকেলে ছিলেন। যাবার পথে চাচাতো ভাইকে কলেজ গেটে রেখে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে কলেজের ভেতর যায় রাহাত। কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় কলেজের মূল গেট থেকে ২০-২৫ গজ ভেতরে সাদি ও তানভীর সিলভার রঙ্গের একটি পালসার মোটরসাইকেলযোগে পেছন থেকে এসে রাহাতের ডান পায়ের উরুতে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতের পর তারা পালিয়ে যায়। পরে রাহাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রাহাতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বর্তমানে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা আছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ সুরমা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম।

তিনি জানান, ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করবে। এছাড়াও ‘খুনিকে’ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের কাছে জোর দাবিও জানান।

এদিকে, রাহাত হত্যার ঘটনায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক আধা ঘণ্টা অবরোধ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সড়ক অবরোধ করেন তারা। এসময় রাহাতের ‘হত্যাকারীকে’ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা। পরে হয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান তালুকদারের আশ্বাসের ভিত্তিতে আধা ঘণ্টা পর বিকেল ৪টায় অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মূল ফটকসহ দক্ষিণ সুরমা কলেজে পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। অভিযুক্ত সাদি ও তানভিরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান তালুকদার।

তিনি বলেন, কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা এখনও পাওয়া যায়নি। তবে অভিযুক্ত সাদি ও তানভিরকে দ্রুত গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে বিস্তারিত বলা যাবে।

আরসি-১০